ভর্তুকির ওপর চাপ বাড়ছেই। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ভর্তুকি খাতে ব্যয় হয়েছে ছয় হাজার ৬৮ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ^বাজারে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ভর্তুকির চাপ আরও বাড়তে পারে।
অর্থনীতির সবচেয়ে অস্বস্তিদায়ক নিয়ামক হলো মূল্যস্ফীতি। সেই মূল্যস্ফীতির চাপই অব্যাহতভাবে বাড়ছে পণ্যমূল্য বাড়ার কারণে। সামনের দিনগুলোয় এ চাপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিবিএসএর তথ্যমতে, জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির এই চাপ চলতি সেপ্টেম্বর শেষে সাড়ে ৮ শতাংশে উঠে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন খোদ পরিকল্পনামন্ত্রী।
এদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য খাতে ভর্তুকি ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে বিদ্যুতের ভর্তুকি ১৭ হাজার কোটি টাকা, সারের ভর্তুকি ১৬ হাজার কোটি টাকা। এলএনজি ভর্তুকি ১৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় রাখা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ সালের বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘সামগ্রিক পরিস্থিতিতে সরকারের ভর্তুকি ব্যবস্থাপনার ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের প্রাথমিক প্রাক্কলনে ব্যয় এবার আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।’
এই ব্যয় আরও বাড়তে পারে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারের মূল্যের সাম্প্রতিক যে গতিপ্রকৃতি, তাতে ভর্তুকি ব্যয় আরও ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যবস্থাপনায় একটি চ্যালেঞ্জ।’
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভর্তুকির চাপ কমানোর জন্য সরকার ইতোমধ্যে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৫২ শতাংশ বাড়িয়েছে। বাড়ানো হয়েছে এলপিজি গ্যাসের দামও। খুব শিগগির বাড়ানো হতে পারে বিদ্যুতের দাম। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করায় সরকারকে এই খাতে আর ভর্তুকি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। উপরন্তু তেল বেচে সরকার এখন মুনাফাও করছে। এর আগে গত আট বছর তেল বেচে বিপিসি ৪৮ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে।