হযরত শাহজালাল আন্তর্র্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ মার্শালারদের দায়িত্বহীনতায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বিমান চলাচল। মার্শালাররা বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণকারী পাইলটের সঙ্গে চাক্ষুস যোগাযোগ এবং স্থল হ্যান্ডলিংয়ের একটি অংশ। তারা উড়োজাহাজের ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের মধ্যে রেডিও যোগাযোগের বিকল্প বা অতিরিক্ত হিসেবে কাজ করেন। বিমান ক্যারিয়ার বা হেলিপ্যাড নেভিগেশন স্থলকর্মীদের এবং পাইলটদের মধ্যে চাক্ষুস সংকেত স্থাপন করেন দায়িত্বরত মার্শালাররা। নিয়ম অনুসারে একজন মার্শালারকে উড়োজাহাজের এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলিংয়ে দক্ষ হতে হয়। তার দেখানো পথ ভুল হলে একটি বিমান ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে। শাহজালাল বিমানবন্দরের মার্শালারদের একটি বড় অংশই দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম অনুসারে কর্মক্ষেত্রে মার্শালারদের অফিসিয়াল
পোশাকের র্যাম্প সেফটি জ্যাকেট (বিমানের ককপিটে বসা পাইলটদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা পোশাক) পরিধানের নিয়ম রয়েছে। এ ছাড়া সুরক্ষিত জুতা, আইডি কার্ড ও সিকিউরিটি পাস বহন করারও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের জারি করা নিয়মনীতির কোনোটাই মানছেন না বেশিরভাগ মার্র্শালাররা।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দর কর্র্তৃপক্ষ মার্শালার আবুল খায়ের প্রামাণিককে তলব করলে দায় স্বীকার করে মুচলেকা দেন তিনি। মুচলেকায় আবুল খায়ের কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, উড়োজাহাজ মার্শালিংয়ের সঙ্গে যুক্তরা বিমানবন্দরে এয়ারলাইজার পাইলটকে বাঁক, ধীরগতির, স্টপ এবং ইঞ্জিন বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেন, যা বিমানটির পার্কিং স্ট্যান্ড বা রানওয়েতে পরিচালিত করে। মার্শালার বিমানকে তার পার্কিং স্ট্যান্ডের দিকে চালিত করে। রানওয়েতে ইঞ্জিনগুলো ঘুরিয়ে, গতি কমিয়ে, থামাতে এবং বন্ধ করতে ইঙ্গিত দেয় তারা। হেলিপ্যাডগুলোয় মার্শালাররা বিমান এবং হেলিকপ্টারগুলোকে উড্ডয়ন ও অবতরণের ছাড়পত্র দেয়, যেখানে অন-অফ এবং ল্যান্ডিংয়ের মধ্যে খুব সীমিত জায়গা এবং সময় রেডিও যোগাযোগকে একটি শক্ত বিকল্প হিসেবে পরিণত করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মহাব্যবস্থাপকের (জিএসই) দপ্তরে আরেকটি একটি লিখিত অভিযোগ দেয় বিমান সংস্থা সালাম এয়ার। এতে উল্লেখ করা হয়, গত সোমবার সালাম এয়ারের একটি ফ্লাইট বে-৮ এ পার্ক করা হয়েছিল। জিএসই বিভাগ সালাম এয়ারের ফ্লাইটে দুটি কনভেয়ার বেল্ট লোডার এবং একটি পুশকার্ট প্রদান করে। কয়েকটি পুশকোডের পুনরাবৃত্তি এড়াতে সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো ছিল উদ্বেগজনক। যেমন- কনভেয়ার বেল্ট লোডারে (বি/এল ৫২৪) কোনো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না। কনভেয়ার বেল্ট লোডার (বি/এল ৫১৮) এর হ্যান্ডব্রেক ছিল সম্পূর্ণরূপে বিকল। পুশকার্ট (বিপিটিটি ২২৬) এর পেছনের চাকার (ডান দিকে) এক পাশ ছিল কাটা এবং চাপ কম ছিল। এ ছাড়া আরও কিছু ব্যত্যয় তুলে ধরা হয় অভিযোগে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, এয়াক্রাফট মার্শালারের বিষয়ে যে অভিযোগ উঠেছে তার সত্যতা মিলেছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মার্শালার ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়েছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে দিকনির্র্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাকে।