শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

বিমান ভাড়া আকাশ ছোঁয়া, হিমশিম খাচ্ছেন প্রবাসী শ্রমিকরা

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২
  • ২৩৭ বার

বাংলাদেশে থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাবার ক্ষেত্রে বিমান ভাড়া এতোটাই বেড়েছে যেটিকে অনেকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।

বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমান ভাড়া সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বলে ট্রাভেল এজেন্ট এবং যাত্রীরা বলছেন।

বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করেন। যাদের বেশিভাগই দেশ থেকে সহায়-সম্বল বিক্রি কিংবা ঋণ নিয়ে সেখানে যান কাজের জন্য।

কিন্তু বিমান ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন বিপাকে পড়েছেন।

প্রবাসীদের জন্য বাড়তি চাপ
কক্সবাজারের মোবিনুল হক মানিক দুবাইতে থাকেন। সপ্তাহ খানেক আগে তিনি দেশে এসেছেন এবং কিছু দিনের মধ্যে আবারো ফিরে যাবেন।

মানিক বলেন, বিমানভাড়া এতোটাই বেড়েছে যে দেশে আসা-যাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে।

দুবাই থেকে টিকিট কাটলে যত খরচ হয়, ঢাকা থেকে টিকিট কাটলে তার চেয়ে অনেক বেশি খরচ হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। এটা কেন হয়, কী জন্য হয় আমি আসলে নিজেই জানি না।

বিমান ভাড়ার ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ছে যারা প্রথমবার কাজের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন তারা।

অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করেন সুমাইয়া ইসলাম। তিনি বলেন, বেশিরভাগ মানুষ ঋণ করে মধ্যপ্রাচ্যে কাজের জন্য যায়। বাড়তি বিমান ভাড়া বহন করা তাদের জন্য বেশ কঠিন। নিম্ন আয়ের মানুষ যারা বিদেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যান তাদের তো ইনকাম বাড়েনি। কিন্তু তাদেরকে এই বাড়তি বিমান ভাড়া গুণতে হচ্ছে। এটা তাদের উপর আর্থিক ও মানসিক চাপ তৈরি করছে।

ভাড়া বৃদ্ধির যুক্তি কী?
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিভিন্ন এয়ারলাইন্স যেমন ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে তেমনি বাংলাদেশের কয়েকটি এয়ারলাইন্সও ফ্লাইট পরিচালনা করে।

তবে ভাড়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি তফাৎ নেই। গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ভাড়া আরো বেশি ছিল।

যেটি কোভিড-এর আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যে কয়েকটি দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করে বাংলাদেশী এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলা।

প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র কামরুল হাসান বলেন, ভাড়া বেড়ে যাবার একটি কারণ হচ্ছে জেট ফুয়েলের দাম এক শ’ পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে জেট ফুয়েলের দাম সরাসরি জড়িত থাকে। এর ফলে ভাড়া বাড়াতে হয়েছে।

তিনি বলেন, তাছাড়া কোভিড পরবর্তী সময়ে ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক বেড়েছে। যাওয়ার সময় যাত্রী বেশি থাকলেও ফিরে আসার সময় যাত্রী অনেক কম থাকে। ফ্লাইট পরিচালনা ব্যয় ভারসাম্য আনার জন্য ভাড়া বাড়াতে হয়েছে।

অতি মুনাফার প্রবণতা
মধ্যপ্রাচ্যগামী বাংলাদেশের বেশিরভাগ যাত্রী তাদের টিকিট কাটেন ট্রাভেল এজেন্টদের মাধ্যমে।

তারা বলছেন, বিমান ভাড়া বিশ্বজুড়েই বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যতটা বেড়েছে তাতে তারা অবাক হচ্ছেন।

ট্রাভেল এজেন্টদের সংগঠন এটাব-এর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মুজিবুল হক সরকার বলেন, বাংলাদেশ থেকে চাহিদা বেড়েছে এটা সত্যি, কিন্তু সেটিকে কেন্দ্র করে অতি মুনাফার প্রবণতায় মেতে উঠেছে অনেক এয়ারলাইন্স। খেয়াল খুশি মতো চলার কারণে এই অবস্থা চলে আসছে। অধিক মুনাফা লাভ এবং খুব বেশি ব্যবসার করার কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, ভাড়া কিছুটা বাড়তে পারে। সীমার অতিরিক্ত ভাড়া বাড়ানোর তো কোনো নিয়ম হতে পারে না।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিভিন্ন সূত্র বলছে, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি একটি সংঘবদ্ধ চক্র এয়ারলাইন্সগুলো থেকে ব্যাপকহারে টিকিট বুকিং দিয়ে একটি কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে রাখে।

ফলে এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে যোগসাজশে তাদের সুবিধা মতো দামও বাড়িয়ে নিতে পারে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে এয়ারলাইন্স এবং ট্রাভেল এজেন্সি সংগঠনের নেতারা।
সূত্র: বিবিসি নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com