মঞ্চে নীল দত্ত গাইছেন, সেই তুমি কেনো এতো অচেনা হলে…। ঠিক মঞ্চের পাশে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে গানে গলা মেলাচ্ছিলেন অঞ্জন দত্ত। সাথে শত শত দর্শক, এরই মধ্যে অঞ্জন দত্ত বারবার চোখ মুছছেন… গান শেষে বললেন, বাচ্চু আমার বিশেষ বন্ধু ছিলো।
পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে নন্দন আর্টসের ব্যানারে অঞ্জন দত্তের লাইভ কনসার্ট হচ্ছিলো ৯ সেপ্টেম্বর, রবিবার সন্ধ্যায়। কানায় কানায় পূর্ণ হলে অঞ্জন দত্ত শুরু করেন কথা দিয়ে। বলছিলেন, তিনি সিনেমা জগতের মানুষ, তবুও শখের গান তাকে পৌঁছে দিয়েছে পৃথিবীব্যাপী। অঞ্জন দত্ত বলছিলেন, আমার জীবনে যতো ভারতীয় বাঙালি আমার গান শুনেছেন, তারচেয়ে বেশি বাংলাদেশি আমার গান শুনেন।
এরপর একে একে শুরু করেন তার যতো বিখ্যাত গান। ম্যারি এ্যান থেকে বেলাবোস, দার্জিলিং থেকে বৃষ্টি, মিষ্টার হল থেকে কাঞ্চনজংঘা… কোন গানই অঞ্জন দত্ত পুরো গাইতে পারেননি, ধরেছেন তিনি, বাকিটা গেয়েছেন দর্শকরা! অঞ্জন দত্ত শুধু গলা মিলিয়েছেন।
অঞ্জন দত্তের গান মানে কথার ঝুড়ি। তাই প্রায় ৩ ঘণ্টা গান হয়েছে যতো, কথা হয়েছে ততো। নীল দত্ত গাইলেন, ছিলে বন্ধু কি স্বাচ্ছন্দে তুমি আমার, ভালো মন্দ যেখানে মিশে একাকার…যদি দেখা হয়ে যায়, অন্য কোন দুনিয়ায়…তুমি চিনতে পারবে কি আমায় আবার…সেই তুমি কেনো এতো অচেনা হলে… সেই আমি কেনো তোমাকে দুঃখ দিলেম…
নীল দত্ত গানের এই মুখটুকো গাওয়ার আগে বলছিলেন, প্রিয় বন্ধুর সাথে দেখা কলকাতার লিফটে, চিকিৎসা করাতে এসেছে কলকাতায়… এরপরই গেয়ে উঠেন, সেই তুমি কেনো এতো অচেনা হলে…
অঞ্জন দত্ত গানে গলা মেলাতে মেলাতে চোখের পানি বারবার মুছছিলেন। অঞ্জন দত্ত মুখে বললেন না যেকথা সেটি বলে গেলেন চোখের পানি দিয়ে, বন্ধুত্ব এমনই, ভীন দেশের এক বন্ধুর জন্য সাত সমুদ্র তেরো নদীর এই পাড়ে শীতের এক কুয়াশার সন্ধ্যায় মন পুডে। লেনাদেনাহীন বন্ধুত্বের নজির স্থাপন করে গেলেন ব্রিটেনে।
আয়োজক নন্দন আর্টসের কর্ণধার রাজীব দাশ রাজু বলেন, নন্দন আর্টস, স্লাউ আড্ডা ও কেনডিডস মিলে এই আয়োজন অত্যন্ত সফল হয়েছে। ভবিষতে ব্রিটেনের অন্য শহরে অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা রয়েছে।