মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাসহ ৬৮৫ জনকে শুনানির আওতায় নিয়ে আসার মধ্যে দিয়ে বন্ধ ঘোষিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ‘ব্যাপক অনিয়ম’ খতিয়ে দেখতে প্রথম দিনের তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর গাইবান্ধা সার্কিট হাউজে ইসির অতিরিক্ত সচিব ও গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অশোক কুমার দেবনাথের নেতৃত্বে এ শুনানি শুরু হয়।
এতে কমিটির সদস্য সচিব ও ইসির যুগ্ম সচিব মো: শাহেদুন্নবী চৌধুরী এবং যুগ্ম সচিব মো: কামাল উদ্দিন বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম দিনের শুনানিতে ১১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৬৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, ৫৫ জন পোলিং এজেন্ট (প্রত্যেক প্রার্থীর পক্ষ থেকে), গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১৩৬ জনের শুনানি চলছে।
ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন ভোট বন্ধ করে দেয় কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন।
ঢাকার নির্বাচন ভবনে বসে সিসিটিভি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ করে একে একে ৫১টি ভোটকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে ইসি। পরে ভোট স্থগিত করে দেয় ইসি।
এমন অবস্থায় ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে এই শুনানির জন্য আদেশ জারি করে ইসির গঠিত তদন্ত কমিটি। মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাসহ অনেকেই রয়েছেন এই শুনানির তালিকায়।
এ ছাড়া দ্বিতীয় দিন অর্থ্যাৎ ১৯ অক্টোবর উপজেলা সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে ৪০ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২৭৮ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২০০ জন পোলিং এজেন্ট (প্রত্যেক প্রার্থীর পক্ষে), সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ৫২২ জনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া ২০ অক্টোবর গাইবান্ধা সার্কিট হাউজে পাঁচ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি ও র্যাবের কমান্ডিং অফিসার দুজন, রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসকসহ ২৭ জনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
গত জুলাইয়ে জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে এই উপনির্বাচনের শেষ করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। উপ-নির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় ৮৮টি এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ৫৭টিসহ ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি ভোটকক্ষ স্থাপন করা হয়েছিল।
সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটিসহ ১৭টি ইউনিয়নে ভোটার রয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৭০ হাজার ১৬০।