ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে এমন সব ব্যাটসম্যান আছেন যারা যেকোনো পরিস্থিতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। তাই ইংল্যান্ডের দলটিকে নিয়ে ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটাররা বেশ আত্মবিশ্বাসী।
মাইকেল ভন টুইটে লিখেছেন, ‘বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের পরিস্থিতি বেশ বেশ ভালো।’
দলটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে ২ নম্বরে আছে। ইংল্যান্ডের গ্রুপে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ও বর্তমান রানার আপ নিউজিল্যান্ড। এবারের টুর্নামেন্টে শিরোপার অন্যতম দাবিদার ইংল্যান্ড।
গত এক বছরে বড় পরিবর্তন
গত বিশ্বকাপের দলের সাথে এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে বেশ কিছু বড় পরিবর্তন আছে। প্রথমত দলটির অধিনায়ক এখন জস বাটলার। ইয়ন মরগান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন।
বাটলার গত বিশ্বকাপের সফলতম ব্যাটসম্যানদের একজন, যিনি এখন ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে আছেন। গত বিশ্বকাপে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে খেলেননি বেন স্টোকস। এবারে তিনি আছেন।
প্রায় তিন বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন অ্যালেক্স হেইলস। বাদ পড়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সেরা ওপেনারদের একজন জেসন রয়। ফিল সল্ট, হ্যারি ব্রুকের মতো টি-টোয়েন্টি লিগ মাতানো ক্রিকেটাররা এবারে দলে জায়গা করে নিয়েছেন।
তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে বিশ্বকাপ শুরুর এক মাস আগে জনি বেয়ারস্টোর চোট। গলফ কোর্সে গিয়ে পা ভেঙেছেন ইংল্যান্ডের ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যান। তিনি এই বছর তো বটেই আবার কবে মাঠে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় আছে।
এক থেকে সাত পর্যন্ত দারুণ সব ব্যাটসম্যান
ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারে আছেন জস বাটলার, যাকে মনে করা হয় সময়ের সেরা হোয়াইট বল ক্রিকেটার। সাথে আছেন অ্যালেক্স হেইলস। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই দু’জন মাঠে নেমে ১১ ওভারে ১৩২ রান তোলেন।
দু’জনের বিকল্প হিসেবে আছেন ফিল সল্ট। পাকিস্তানের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সুযোগ পেয়ে তিনি দারুণ ব্যাট করেছেন। গত এক বছরে ১১ ম্যাচে ১৬৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন সল্ট। মিডল অর্ডারে আছেন ডেউইড মালান, মঈন আলী, হ্যারি ব্রুক। যাদের স্ট্রাইক রেট ১৪০-এর নিচে নয়।
গত এক বছরে স্ট্রাইক রেট
মঈন আলী ১৫৮, ডেউইড মালান ১৪১ ও হ্যারি ব্রুক ১৪৯।
লিয়াম লিভিংস্টোন সময়ের সেরাদের একজন
ইংল্যান্ডের দলে বাড়তি নজর থাকবে লিয়াম লিভিংস্টোনের দিকে। যেকোনো পরিস্থিতিতে বল মাঠের বাইরে পাঠাতে পারেন তিনি। ২৩ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিনি ১৫২ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ২০০ টি-টোয়েন্টি খেলে তিনি ৩০৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন।
লিয়ান লিভিংস্টোন আবার বল হাতেও ভূমিকা রাখতে পারেন।
ইংল্যান্ডে সব ধরনের ক্রিকেটার আছে
ইংল্যান্ডের এই দলে যেমন ক্রিকেটের মঈন আলী ও বেন স্টোকসদের মতো প্রথাগত অলরাউন্ডার আছেন, তেমনি ইউটিলিটি ক্রিকেটাররাও আছেন। যারা সময়ের তাগিদে ভূমিকা রাখতে পারেন।
যেমন ক্রিস জর্ডান, যিনি মূলত বোলার। দারুণ আউটফিল্ড ফিল্ডিং করেন তিনি, ব্যাট হাতে ছক্কা হাঁকাতে পারেন এই ক্রিকেটার।
ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে ক্রিস জর্ডানের কদর আছে। এমন ক্রিকেটার আরো আছেন ইংল্যান্ডের এই দলে। যেমন ডেভিড উইলি, ক্রিস ওকস। দু’জনই দারুণ ফাস্ট বোলার, সাথে ব্যাট হাতে সুযোগ পেলেই তারা বল গ্যালারিতে পাঠাতে সক্ষম।
এছাড়া ব্যাট বল হাতে ভূমিকা রাখতে পারেন ডেভিড উইলি, ক্রিস জর্ডান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই ধরনের ক্রিকেটারদের ইউটিলিটি ক্রিকেটার বলা হয়ে থাকে।
দুজন স্পেশালিস্ট বোলার ভারসাম্য আনবে
ফাস্ট বোলিংয়ে ইংল্যান্ড মূলত মার্ক উডের ওপর ভরসা রাখবে। গতিশীল বোলিংয়ের জন্য পরিচিত এই বোলার কিছু দিন আগে চোট কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন।
এছাড়া সম্প্রতি স্যাম কারানও ডেথ ওভারে ভালো বল করছেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সদ্য সমাপ্ত সিরিজে প্রথম দু’ম্যাচেই ইংল্যান্ড আট রানের জয় পেয়েছে। দু’টি ম্যাচেই স্যাম কারান ডেথ ওভারে ভালো বল করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন লেগ স্পিনার আদিল রাশিদ। তিনি ২৩ ইনিংসে গত এক বছরে ২৪টি উইকেট নিয়েছেন। ২৭ গড়ে বল করেছেন তিনি।
আদিল রাশিদ সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সেরা লেগ স্পিনারদের একজন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের বোলারদের র্যাংকিংয়ে আট নম্বরে আছেন রাশিদ।
সূত্র : বিবিসি