নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস গত কয়েক দিনেই প্রায় দুই হাজার লোকের শরীরে বাসা বেঁধেছে। শুধু চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি মানবদেহে প্রবেশের পর উপসর্গ প্রকাশের আগেই অন্য দেহে ছড়িয়ে পড়ছে। গতকাল এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় চীন বেশ কিছু শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। সবচেয়ে আক্রান্ত প্রদেশ উহানকে মোটামুটি অন্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। গণপরিবহনসহ যেসব স্থানে লোকজনের সমাগম হয়ে থাকে সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। গতকাল রবিবার থেকে চীনে সব ধরনের বন্যপ্রাণী বেচাকেনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেননা ধারণা করা হচ্ছে ভাইরাসটি প্রাণীর মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। যদিও বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হতে পারেননি।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপসর্গ প্রকাশের আগে অন্য দেহে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি বেশ জটিল। মানব দেহে এটি সুপ্ত অবস্থায় এক থেকে চৌদ্দ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। অর্থাৎ কেউ আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু তার কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এই সময়ের মধ্যেই এটি অন্য দেহেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিবিসির বিশ্লেষণে অবশ্য এ বিষয়টি গবেষণায় বড় ধরনের অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এমনকি এর মাধ্যমে করণীয় ঠিক করা যাবে। এতে আশা করা হচ্ছে, চীনা কর্তৃপক্ষ ভাইরাসটি থামিয়ে দিতে সক্ষম হবে।
এর আগে পরিচিত প্রাণঘাতী ভাইরাসের মধ্যে সার্স (যেটি চীনে বহু লোকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল) ও ইবোলা যখন উপসর্গ দেখা দেয় একমাত্র তখনই অন্য দেহে সংক্রমিত হতে পারে। এ কারণে সেসব ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কিছুটা সহজ ছিল। অর্থাৎ উপসর্গ দেখা দিলেই তাদের আলাদা করে রাখার সুযোগ ছিল।
এদিকে উহানের বাসিন্দাদের জন্য গোটা বিশ্বে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা রয়েছেন। ইতোমধ্যে উহানের দূতাবাস থেকে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া সেখানকার মার্কিন নাগরিকদেরও সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। দূতাবাসের কর্মীদের তোলার পর উড়োজাহাজের অবশিষ্ট আসনগুলোর জন্য সীমিত সংখ্যক মার্কিন নাগরিককে শহরটি ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে গতকাল রবিবার এক ইমেইল বিবৃতিতে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়টি। ২৮ জানুয়ারি ‘সিঙ্গেল ফ্লাইটের’ ওই উড়োজাহাজটি উহান থেকে সানফ্রান্সিসকো যাবে বলে জানানো হয়েছে।