যশোরে বেগুন রক্ষার নামে ব্যাপকহারে পাখি নিধনের অভিযোগ উঠেছে। সবজি ক্ষেতে ফসল রক্ষার নামে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যবহার করে এসব পাখি নিধন করছেন এক শ্রেণির অসাধু কৃষক।
যশোর সবজির জন্য যশোরের রয়েছে দেশব্যাপী বিশেষ পরিচিতি। জেলায় সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ হয় সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর, কাশিমপুর ও লেবুতলা ইউনিয়নে। এসব ইউনিয়নে বেগুনের আবাদ বেশি হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলার কৃষকেরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চুড়ামনকাটির পোলতাডাঙ্গা গ্রামের চাষিরা তাদের বেগুন ক্ষেতকে পাখির হাত থেকে রক্ষা করতে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। ওই জালে পাখি বসার সাথে সাথেই আটকা পড়ে জালে জড়িয়ে মারা যাচ্ছে। দিনের পর দিন এভাবে পাখি নিধন হলেও কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা নীরব ভূমিকা পালন করছে।
রিপন হোসেন নামে একজন কৃষক বলেন, পাখি পোকামাকড় খায় এটা ঠিক, কিন্তু কিছু পাখি আছে তারা বেগুন খেয়ে সাবাড় করে দেয়। এ কারণে পাখির হাত থেকে ক্ষেতকে রক্ষা করতে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা হয়। তার দাবি, কৃষকের উপস্থিতে পাখি মারা যায় না। তাদের অজান্তে একটা দুটো পাখি মারা যেতে পারে। নিরুপায় হয়েই তারা নেট ব্যবহার করছেন।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, বেগুনচাষিদের কাছে পাখি আতঙ্ক। কিছু পাখি বেগুন ঠুকিয়ে নষ্ট করে দেয়। যা পরবর্তীতে পচে যায়। তিনি পাখির উৎপাত থেকে রক্ষায় বিকল্প পথ বের করার দাবি জানান।
হৈবতপুর, চুড়ামনকাটি ও কাশিমপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, ক্ষেতে নেট টাঙিয়ে পাখি নিধন না করার জন্য কৃষকদের বার বার বলা হয়। এরপরও কেউ কেউ এমন অপরাধ করছেন।
তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলেও জানান তারা।
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক দিপঙ্কর দাস বলেন, বেগুন ক্ষেত রক্ষার নামে ফাঁদ পেতে পাখি নিধনের বিষয়টি জানা ছিল না। এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হবে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সাইবুর রহমান মোল্লা বলেন, সকল পাখিই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া, বন্যপ্রাণী নিধন দণ্ডনীয় অপরাধ। বেগুন ক্ষেত রক্ষার নামে পাকি নিধন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। পাখি রক্ষায় তিনি এই ধরনের ফাঁদ খুলে দেয়ার জন্য কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকল দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।