একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে ভারতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিম কর্তৃক জনমত সুসংগঠিত করার পাশাপাশি তহবিল সংগ্রহের অবিস্মরণীয় ঘটনা নিয়ে টিভি ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগরের লেখা গল্প অবলম্বনে রায়হান রাফি পরিচালিত ‘দামাল’ ছবিটি ১৮ নভেম্বর শুক্রবার নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ সিটিতে একযোগে মুক্তি পাবে। এরপর বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মুক্তি পাবে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৫ সিটিতে। ছবিটির প্রিমিয়ার শো হচ্ছে ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি অধ্যুষিত কুইন্সে ‘জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা’ হলে।
এ উপলক্ষে ১৬ নভেম্বর বুধবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উত্তর আমেরিকাস্থ বায়োস্কোপ ফিল্ম’র কর্ণধার রাজ হামিদ বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। রাজ হামিদ উল্লেখ করেন, আমেরিকা ও কানাডার প্রথম প্রজন্মের বাংলাদেশি ছাড়াও নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি আমেরিকানরাও ছবিটি দারুনভাবে উপভোগ করতে সক্ষম হবেন। কারণ, ছবি চলাকালে স্ক্রিণে ইংরেজি অনুবাদ থাকবে।
রাজ হামিদ উল্লেখ করেন, ২০১৭ সাল থেকে আমি উত্তর আমেরিকায় বাংলা চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে আসছি। বেশ কটি ছবি ব্যবসা সফল ছিল। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে। নির্মাতারা জীবন-ঘনিষ্ঠ স্ক্রিপ্ট রচনার পাশাপাশি পরিবারের সকলে একত্রে উপভোগ করা যায়-এমন ছবি নির্মাণে কথা ভাবছেন। অর্থাৎ প্রবাসের দর্শকগণের আবেগ-অনুভূতি গুরুত্ব পাচ্ছে নতুন ছবি তৈরীর ক্ষেত্রে। গত ৫ বছরে এটাই বড় সাফল্য ‘বায়োস্কোপ ফিল্ম’র। আর এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে আমেরিকা আর কানাডার দর্শকদের।
রাজ হামিদ উল্লেখ করেন, এ যাবত আমরা ২৮টি ছবি প্রদর্শন করেছি। দামাল হবে ২৯তম ছবি। সকলকে ছবিটি দেখার অনুরোধ রাখছি। আশা করছি, ভিন্ন মাত্রায় তৈরী ছবিটি সকলের ভালো লাগবে।
বাংলা ছবিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো জনপ্রিয় করার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলগুলো পুনরায় চালুর জন্যে নানা পরিকল্পনার কথা জানালেন রাজ হামিদ।
তিনি বলেন, বায়োস্কোপের প্যারেন্ট অর্গানাইজেশন হচ্ছে ‘আমেরিকান’-বায়োস্কোপ এলএলসি ইউএসএ’। আমরা ২০২০ সালে ‘বায়োস্কোপ সাউথ আফ্রিকা’ নিবন্ধন করেছি। কিন্তু আফ্রিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এখনও সেটির কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আমরা ‘বায়োস্কোপ-কানাডা’ নিবন্ধন করেছি। এবং ‘পরাণ’ হবে ডিসেম্বরে বায়োস্কোপ কানাডার ব্যানারে প্রদর্শিত প্রথম ছবি। সামনের বছরের প্রথম দিকে আসবে ‘বায়োস্কোপ ডিভাইন’। কারণ আমরা ঐ মার্কেটেও ঢুকতে চাই।
রাজ হামিদ উল্লেখ করেন, আমরা প্রথম যখন শুরু করি সে সময় অনেকে হাসাহাসি করেছেন। বলেছেন যে, কেন আমরা বাংলা ছবি নিয়ে এত মাতামাতি করছি। সময়ের পরিক্রমায় এখন ঐসব প্রবাসীরাই জানতে চান যে, পরের ছবি কোনটি আসছে। তারা দুয়েকটি ছবি আনার অনুরোধও জানাচ্ছেন। এখানেই বিরাট একটি প্রাপ্তি বলে মনে করছি।
সংবাদ সম্মেলনে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেডের পক্ষে উত্তর আমেরিকাস্থ চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের ছবি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাগৃহে রিলিজ করার পদক্ষেপ নেয়ায় আমেরিকান বায়োস্কোপ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের উত্তর আমেরিকা সংস্করণের নির্বাহী সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, কম্যুনিটি এ্যাক্টিভিস্ট মিনহাজ সাম্মু, উত্তর আমেরিকাস্থ প্রথম আলোর সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন প্রমুখ।