মুসলিম উম্মাহ নর্থ অফ আমেরিকা (মুনা)’র কনভেনশন আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ আগষ্ট ২০২৩ ফিলাডেলফিয়ার পেনসিলভেনিয়া কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। করোনাকালীন পরিস্থিতির কারনে ৩ বছর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৫ ডিসেম্বর সোমবার কুইন্সের জ্যাকসন হাইটস্থ নবান্ন রেষ্টুরেন্টে আয়েজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুনা’র ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর আরমান চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন। এ সময় মুনা’র অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মজলিশ শুরা সদস্য আব্দুল্লাহ আল আরিফ, ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ ও মজলিশ শুরা সদস্য এম এম মাওলা সুজন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন মুনা নিউইর্য়ক নর্থ জোন সভাপতি হাফেজ আব্দুল্লাহ আল আরিফ ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মুনা ন্যাশানাল প্রেসিডেন্ট হারুন অর রশীদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মুনা ৩ বছর বিরতির পর আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ আগষ্ট ২০২৩ ফিলাডেলফিয়াস্থ পেনসিলভেনিয়া কনভেনশন সেন্টারে বিশাল কনভেনশন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এই কনভেনশন মুসলিম জীবনে বিশেষ করে বাংলাদেশি আমেরিকান পরিবারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। মুনা আমেরিকার একটি দাওয়াতি ও সামাজিক সংগঠন। মানুষের ব্যক্তিগত নৈতিক ও সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমে আল্লহ’র সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে প্রতিষ্ঠিত। মুনা সংগঠনটি ১৯৯০ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে কর্পোরেশনভুক্ত করা হয়। বর্তমানে মুনা আমেরিকার ৪০ এর অধিক রাজ্যে কর্মতৎপরতা পরিচালনা করছে। মুসলমানদের প্রাত্যহিক সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ড এবং জাতীয় নাগরিক জীবনে ভূমিকা পালনের নিমিত্তে সংগঠিত করতে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে করে এই সমস্ত ব্যক্তিবর্গ আল্লাহ এবং তাঁর রসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণের মাধ্যমে মানবতার সেবা করে যেতে পারে।
এবারের কনভেনশনে কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় এবং থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আল-কোরআন গাইডেন্স ফর হিউম্যানিটি’ । আল-কোরআন পথ নির্দেশ করে গোটা মানব জাতিকে। কল্যাণকর ও নির্ভুল পথ পরিদর্শন করে পথভ্রষ্ট দিকহারা মানবতাকে। এটা বিজ্ঞানময়। এটা অলৌকিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি। এটা একজন বিশ্বাসী মানুষের বিশ্বাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজ পরিবর্তনের একমাত্র শাশ্বত চ্যালেঞ্জিং বিধান। এটি শুধু মুসলিম তথা ইসলামে বিশ্বাসীদের জন্য নয় ।এটা গোটা মানব গোষ্ঠীর উন্নতি ও অগ্রগতির সোপান। এই মহাগ্রন্থের কল্যাণকর পতাকা প্রতিটি হৃদয়ে, প্রতিটি ঘরে । মুনা এই বিশ্বাস ধারণ করেই এবারের কনভেনশনে মূল কেন্দ্রীয় প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করেছে।
মুনা নিজের সদস্য ও অন্যান্য মুসলিমদেরকে নিয়ে এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দিতে চায় যাতে তারা অন্য ধর্মাবলম্বী , ভিন্ন ভাষাভাষী বর্ণ ও গোত্রের জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবেশীদের সাথে পারস্পরিক সংলাপে নিয়োজিত হতে পারে। যার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বোঝাপড়া, সামাজিক প্রসার ও উন্নয়ন ঘটানো যায়। মুনা মনে করে- এ প্রক্রিয়ায় সমাজের সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব। এবারের কনভেনশন এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে ।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, মুনা একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও রাজনীতি সম্পর্কে উদাসীন নয়। মুনা চায় রাজনৈতিক বিষয়াবলীতে নাগরিকগণ সচেতনভাবে অংশগ্রহণ করুক এবং এর ফলে রাষ্ট্রীয় জীবনে সুচারু সিস্টেম বহাল থাকুক। মুনা চায় বিশ্বকে নেতৃত্ব দানকারী এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনশক্তি এবং অন্যান্য নাগরিকগণ বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাথে সক্রিয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলুক যাতে করে তাদের কথা শোনা হবে এবং তাদের অধিকার রক্ষা করা যাবে । তাদেরকে বৈষম্যের রাজনৈতিক জীবনের এক প্রান্তে ঠেলে দিয়ে উপেক্ষা করা হবে না। মুনা চায়, বাংলাদেশী-আমেরিকানরা কর্মতৎপরতায় বেশি বেশি করে সক্রিয় অংশগ্রহণ করুক। সাথে সাথে বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে গড্ডালিকা প্রবাহ থেকে বাঁচাতে চায়। প্রতিটি বাংলা ভাষাভাষী অভিভাবক তাদের সন্তানকে মুনা ইয়ূথ এবং ইয়ং সিস্টার অফ মুনার সাথে সম্পৃক্ত করুক । মুনা চায় বাংলাদেশি আমেরিকানদের আমেরিকার মূলধারার মুসলিম স্কলার ও নেতৃবৃন্দের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। এবারের সম্মেলনে দিকনির্দেশনা সম্বলিত আলোচনা রাখবেন বিশ্ব বিখ্যাত সুপরিচিত অভিজ্ঞ আলোচকবৃন্দ। এবারের ইংরেজি আলোচকদের সাথে সাথে থাকবেন বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশ থেকে আগত বাংলা ভাষার ইসলামিক স্কলারগণ।
সম্মেলনে প্রতিবারের মতো এবারও রয়েছে তরুণ ছেলেমেয়েদর জন্য আলাদা ইয়ূথ কনভেনশন এবং ইয়ং সিস্টার্স কনভেনশন। আল-কোরআনের অনুসারে কল্যাণকর জীবন যাপনের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের উপর প্যারালাল গ্রোগ্রাম রয়েছে । আলোচনা ছাড়া থাকবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।