শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়া ও গ্রেট গেম

মাসুম খলিলী
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১০৪ বার

২০২৩ সালে পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টি আকর্ষণী অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে দক্ষিণ এশিয়া। এই অঞ্চলটি পরাশক্তিগুলোর প্রক্সিযুদ্ধের ক্ষেত্রে পরিণত হতে শুরু করেছে আগেই। নতুন বছরে এটি আরো সরাসরি বৈশ্বিক সঙ্ঘাতের কেন্দ্র হতে পারে। এখানকার রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতিতে মনে হয় বৈশ্বিক রাজনীতি যেমন এই অঞ্চলের ঘটনা পরম্পরাকে প্রভাবিত করবে, তেমনিভাবে এখানকার নানা ঘটনা বিশ্ব রাজনীতিকেও প্রভাবিত করতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় দুই প্রভাবশালী শক্তির একটি-চীনকে দক্ষিণ এশিয়ার অংশ বিবেচনা করা হয় না। তবে সন্নিহিত ভূখণ্ডের দেশ এবং নিকটবর্তী বৈশ্বিক শক্তি হিসাবে এই অঞ্চলের সব দেশেই বেইজিংয়ের সক্রিয় প্রভাব অনুভব করা যায়। এই অঞ্চলের অন্য প্রতিদ্ব›দ্বী শক্তি ভারতের সাথে চীনের রয়েছে গভীর সীমান্ত সঙ্ঘাত ও প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা। আবার নানা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংগঠনে সহযোগিতার সম্পর্কও রয়েছে দেশ দুটির মধ্যে। এটি দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাকে বেশ জটিল করে তুলেছে। এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের পরিস্থিতিকেও তা নানাভাবে প্রভাবিত করছে।

উত্তাল বিশ বাইশ ও তেইশ
বিদায় নেয়া ২০২২ সাল দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ছিল উত্তাল বছর। এ সময় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা নেতৃত্বের পরিবর্তন দেখেছে। পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একটি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন। ভারতের শাসক দলের রাজনৈতিক কৌশল সেখানকার সা¤প্রদায়িক উত্তেজনাকে তীব্র করে তোলে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি ঘাটতি, সরকারি ঋণ বৃদ্ধি, বৈদেশিক রিজার্ভের ক্ষয়, বন্যা ও খরা আর সে সাথে রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম এ সবই ঘটেছে এই অঞ্চলে।

২০২২ সালের এ অবস্থার ধারাবাহিকতা ২০২৩ সালে অব্যাহত থাকবে। এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে এই সময়ে নির্বাচনের সূচি রয়েছে যার মধ্যে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ রয়েছে। পরের বছর নির্বাচন হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়। মালদ্বীপের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে এই সময়ে। মিয়ানমারেরর জান্তা সরকারও সমঝোতা বা একতরফাভাবে একটি নির্বাচন করতে চায় ২০২৩ সালে। এসব দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সাধারণভাবে যেসব দেশে মুক্ত ও অবাধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সে সব দেশে বাইরের প্রভাবের ধরন থাকে এক রকম। আবার যেসব দেশে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন বা স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে সেখানে পরিস্থিতি থাকে ভিন্ন। এসব কিছুর ওপর বৈশ্বিক রাজনীতি ও স্বার্থ দ্ব›দ্ব হয়ে ওঠে কাঠামোগতভাবে সর্বব্যাপী প্রভাব বিস্তারের ফ্যাক্টর।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-চীন প্রতিযোগিতা ক্রমেই তীব্র হয়ে চলেছে। ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং পাকিস্তানকে সাবমেরিন সরবরাহ করেছে এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তার নৌ উপস্থিতি প্রসারিত করেছে চীন। ভারত-চীন দুই দেশ দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে অবকাঠামো, আর্থিক সহায়তা এবং ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য প্রতিযোগিতা করেছে। গত ডিসেম্বরে, চীন ভারতের সামরিক বাহিনী তাদের বিরোধপূর্ণ সীমান্তের পূর্ব অংশ অরুণাচলে সঙ্ঘাতে লিপ্ত হয়। ২০২০ সালে লাদাখে একটি মারাত্মক সংঘর্ষের পর এটি ছিল সীমান্ত অঞ্চলে তাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ লড়াই।

ভারত-চীন প্রতিযোগিতার গভীরতা এই অঞ্চলে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে। চীনের মিত্র হিসাবে পরিচিত পাকিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশ দুই শক্তির মধ্যে তাদের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে চায় এবং মহাশক্তির প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হওয়া থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চায়। কিন্তু সঙ্ঘাত যেভাবে সূচালো হয়ে উঠছে আর ভারত-চীনের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি প্রভাব বিস্তারে সক্রিয় হয়ে উঠছে এবং একই সাথে এই অঞ্চলের ঘটনা পরম্পরায় রাশিয়া সরাসরি জড়িয়ে যাচ্ছে তাতে সব শক্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে পথ চলা এই অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য সামনে আরো দুরূহ হয়ে উঠতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি সরকার একটি অনিশ্চিত রাজনৈতিক অবস্থার মধ্যে ২০২৩ সালে প্রবেশ করেছে। অস্থিরতার সবচেয়ে বড় কারণগুলোর মধ্যে একটি অর্থনীতি। এই অঞ্চলের সরকারগুলো যদি অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি আনতে পারে তবে জনগণের ক্ষোভ কমতে পারে।

বাংলাদেশ: সঙ্ঘাত প্রবণতা বাড়ছে
বাংলাদেশ ২০২২ সালের শেষার্ধে একটি অস্থির পরিস্থিতি পার করে ২০২৩ সাল শুরু করেছে। শাসক দল আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে এখানে ক্ষমতায় রয়েছে। ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে ক্ষমতা নবায়ন করার পর মেয়াদের ঠিক এক বছর আগে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চাপ সরকারবিরোধী বড় বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এই বিক্ষোভ দমনে সরকারের মধ্যে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পেশি ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবে যেকোনো রাজনৈতিক ক্র্যাকডাউন পশ্চিমাদের চাপ বাড়াতে পারে। এর মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেকোনো পরিসরের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে তার ক‚টনীতিকদের নির্দেশনা দিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানকার নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। আগামী নির্বাচন কেমন হবে এবং বাংলাদেশী নাগরিকরা নির্বিঘ্নে ভোট দেয়ার ক্ষমতা ফিরে পাবে কি না তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকাণ্ড ইঙ্গিত দিয়েছে যে অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ করা নতুন নির্বাচন কমিশন এখনো ভোটার বা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে পারেনি।

দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে সরকারে সংস্কার না করা হলে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই। আগামী নির্বাচনের জন্য ইভিএম সম্পূর্ণভাবে পাওয়া যাবে বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ৩০০ সংসদীয় আসনের অর্ধেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। যদিও সুশীল সমাজের সংগঠন এবং বেশির ভাগ বিরোধী রাজনৈতিক দল ইভিএম ব্যবহারের প্রতিবাদ করেছে। তাদের আশঙ্কা, এই ব্যবস্থায় সরকার ইচ্ছামতো নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করতে পারবে। ইসি ভবিষ্যৎ নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার এগিয়ে নিতে বিরোধী দলগুলোর মতামত আমলে নেয়ার অবস্থায় আছে বলে মনে হয় না। বিস্ময়করভাবে আট হাজার ৭১১ কোটি টাকা ইভিএম কেনার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, যেগুলোতে ভোটার-ভেরিফাইয়েবল পেপার অডিট ট্রেল সিস্টেম নেই।

বিরোধী দলগুলোও জোর দিয়ে বলেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে মুক্ত ও অবাধ নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই এবং তারা এই নির্বাচনে অংশ নেবে না, কিন্তু শাসক দল আওয়ামী লীগ সেটি মানতে রাজি নয়। বাংলাদেশের বেসামরিক প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিরপেক্ষতার অভাবের কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর নাগরিকদের মধ্যে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি ২০১৮ এর তুলনায় এবারও ভিন্ন নয়। পুলিশ শাসক দলের পক্ষে কাজ করছে এমন অভিযোগ বাড়ছে। অনেক উচ্চপদস্থ বেসামরিক আমলা এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের ‘বাধ্যতামূলক অবসরে’ পাঠানোর সরকারের সা¤প্রতিক সিদ্ধান্ত নির্বাচনের আগে প্রশাসন ও পুলিশ উভয়কেই লাইনে রাখার জন্য একটি শুদ্ধি অভিযান বলে অনেকে মনে করছেন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে সরকারব্যবস্থায় সংস্কার করা না হলে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বাসযোগ্য বিভিন্ন মূল্যায়নে বলা হচ্ছে, অর্থনীতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ এবং স্বৈরাচারী শাসন সম্পর্কে হতাশা নাগরিকদের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। আর এই অবস্থা বর্তমান সরকার শক্তির সাথে মোকাবেলা করতে চায় বলে মনে হচ্ছে। এখানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার অর্থ হলো বিরোধীদের ওপর আরো দমন এবং আগামী মাসগুলোতে ভিন্নমতের কণ্ঠকে দমন করা। এসব প্রবণতা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একটি অস্থির ভবিষ্যৎ নির্দেশ করে।

তবে বাংলাদেশের জন্য ২০২৩ সালের সবচেয়ে উদ্বেগজনক শঙ্কাটি হলো সরকার সমঝোতার পথে না গিয়ে প্রান্তিকতার দিকে ঝোঁকার ফলে বাংলাদেশ পরিস্থিতির রাজনৈতিক সমাধানের রাস্তা ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসা। আর রাষ্ট্রের প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের একতরফা আয়োজনে সমর্থন দিতে থাকলে বৈশ্বিক পক্ষগুলো কৌশলগত পদক্ষেপে উদ্যোগী হতে পারে। শাহীনবাগে আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারে যাবার ঘটনায় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য এই আশঙ্কা প্রবল করে তুলেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা এবং প্রক্সিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে, যার প্রভাব পড়ে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার ওপর। এ অবস্থায় রাষ্ট্র হিসাবে সংশ্লিষ্ট দেশ অকার্যকর এবং নাগরিকরা অরক্ষিত হবার পরিস্থিতিতে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়। প্রতিবেশী মিয়ানমার সিরিয়া বা ইউক্রেনের ক্ষেত্রে এটি দেখা গেছে।

শ্রীলঙ্কা ক্ষত উপশমের চেষ্টা
শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকার গণবিক্ষোভের পর এই গ্রীষ্মে কার্যভার গ্রহণ করেছে এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন পর্যন্ত এই সরকার ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে; সরকার আশা করে যে, জুলাইয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগই জনগণকে সন্তুষ্ট করার জন্য যথেষ্ট ছিল। তবে বিক্ষোভকারীরা পুরো সরকারের বিদায় দাবি করেছে।

কলম্বো একটি কঠোর লাইন নিতে প্রলুব্ধ হতে পারে। প্রতিবাদগুলো অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা বিঘ্নিত করবে বলে সরকার তা হতে দিতে চায় না। রাজাপাকসে পরিবারের বেহিসেবি প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টায় ২০২২ সালে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থায় পড়ে দেশটি। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকে শ্রীলঙ্কার ধারাবাহিক সরকারগুলো ঋণের ফাঁদে পড়ে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে, তৎকালীন নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসে ট্যাক্স কমিয়ে দেন, এর কয়েক মাস পরে কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হয়। এতে পর্যটন আয়ে ধস নামে এবং তখন সরকারকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হতে হয়। কিন্তু এরপরও দেশটি প্রচুর পরিমাণে ব্যয় করে, যার ফলে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটে। রাজাপাকসে ২০২১ সালে রাসায়নিক সার নিষিদ্ধ করেন, যা ব্যাপকভাবে কৃষি উৎপাদন কমিয়ে দেয় এবং ক্রমবর্ধমান খাদ্য খরচ আরো বেড়ে যায়। ফলস্বরূপ, শ্রীলঙ্কা বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কটে নিমজ্জিত হয়।

এক পর্যায়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯০ শতাংশে বৃদ্ধি পায়, গ্যাস স্টেশনগুলোতে জ্বালানি শেষ হয়ে যায় এবং ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক রিজার্ভ মাত্র ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে আসে। শ্রীলঙ্কার মুদ্রার মান ৮০ শতাংশ কমে যায় এবং অর্থনীতি কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যত্র, বাংলাদেশ, নেপাল এবং পাকিস্তানও এই বছর একই রকম অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে কিন্তু শ্রীলঙ্কার মতো এতটা গুরুতর ছিল না সেটি। এর ফলে গত মে মাসে, শ্রীলঙ্কা তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঋণখেলাপি হয়। এই সঙ্কট গণবিক্ষোভে রূপ নিলে রাজাপাকসেকে গত জুলাই মাসে পদত্যাগ করতে হয়।

শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকার আইএমএফের সাথে সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এটি সফল হলে পশ্চিমারা সহযোগিতার বন্ধ দুয়ার আবার উন্মুুক্ত করতে পারে। এটি দেশটিকে আবার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় চীনা প্রভাব শ্রীলঙ্কার ওপর যে মাত্রায় হোক না কেন কমতে থাকবে। পশ্চিমের সাথে দুর্বল হয়ে পড়া সম্পর্ক আবার জোরদার হতে পারে।

পাকিস্তান : বহুমুখী সঙ্কট উত্তরণের চেষ্টা
পাকিস্তানে শাসন পরিবর্তনের পর গত এপ্রিল থেকে ক্ষমতাসীন জোট সরকার অর্থনৈতিক সমস্যার লাগাম টেনে ধরার জন্য সংগ্রাম করছে এবং গভীরভাবে অজনপ্রিয় এই সরকার অক্টোবরে নির্ধারিত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা যত বেশি দিন এ দফায় ক্ষমতায় থাকা যায় সে আশায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে গভীর ক্ষমতা বলয়ের সাহায্যের ওপর ভরসা করছে সরকার।

পাকিস্তানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের একটি বৃহৎ এবং ক্রমবর্ধমান জনসমর্থনের ভিত্তি রয়েছে আর তারা রাস্তার বিক্ষোভ বা সংসদীয় কৌশলের মাধ্যমে আগাম নির্বাচন আদায়ের জোরদার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ভঙ্গুর জোট সরকারকে একতরফা সমর্থন দিয়ে এস্টাবলিশমেন্ট বা ডিপ স্টেট জনসমর্থনের বিপরীতে দাঁড়ানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে বলে মনে হয় না।

এ অবস্থায় জোট সরকার তাদের শাসনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় জোর খাটানোর কৌশল নেয়ার চেষ্টা করতে পারে। ইমরান খানের প্রভাবের ভয়ে সরকার তাকে রাজনীতি থেকে অযোগ্য ঘোষণা করতে আদালত ব্যবহার করার চেষ্টাও করতে পারে। ইমরান খানকে গত অক্টোবরে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় কিন্তু এটি করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন, আদালত নয়। ফলে এর কার্যকারিতা তেমন ফলপ্রসূ কিছু হয়নি। আদালত এটি করবে বলে এখনো মনে হচ্ছে না।

ইমরান খান গত মাসে মিডিয়াকে বলেছিলেন, আশঙ্কাজনক অর্থনৈতিক সঙ্কটের একমাত্র সমাধান হলো দেশে আগাম ভোট করা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নতুন নির্বাচন এবং একটি নতুন সরকার কি রাজনৈতিক সঙ্কটের অবসান ঘটাবে এবং অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে? অনেক বিশ্লেষক আশাবাদী যে আগামী বছর পাকিস্তান আরো ভালো করবে। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক। নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগে অনিশ্চয়তার মূল উৎস দূর হয়েছে। এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচনী ক্যালেন্ডার। এ ক্ষেত্রে সমন্বয় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যেখানে এস্টাবলিশমেন্টের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। নতুন সেনাপ্রধানের মধ্যপ্রাচ্য সফরে মনে হচ্ছে সে দায়িত্ব তিনি পালন করতে শুরু করেছেন।

মোদির কৌশলে কতটা সাফল্য আসবে
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন যখন পুতিনের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের একত্রিত করে তখন দক্ষিণ এশিয়ার অর্ধেক দেশ আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে জাতিসঙ্ঘের প্রথম প্রস্তাবে ভোট দান থেকে বিরত ছিল। রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের অজুহাতে এ অবস্থার নেতৃত্ব দিয়েছে ভারত। আক্রমণের কয়েক মাস পর, ভারত সংঘর্ষের শান্তিপূর্ণ সমাপ্তির আহ্বান জানিয়েছিল কিন্তু পুতিনের সরাসরি নিন্দা বা সমালোচনা থেকে বিরত ছিল। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সরকারগুলোও সেটি অনুসরণ করে। মোদি পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন রুশবিরোধী প্রচারণার সাথে একত্র হতে চান না। কাউকে বিমুখ না করে তিনি বৈশ্বিক নেতৃত্বের দুই ললনার সান্নিধ্য এক সাথে পেতে চান।

২০২৪ সালে ভারতে লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। একটি সাধারণ নির্বাচনের এক বছর আগে, বিশেষ করে যখন একজন প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করার সময় হয় তখন সেটি হয়ে ওঠে অত্যন্ত রাজনৈতিক তাৎপর্যবহ। এমন এক সময়ে শাসক দল একটি স্পষ্ট সুবিধা নিয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

২০২৩ সালে, নন-এনডিএ দলগুলোর কৌশল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করতে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী রাজ্যভিত্তিক দলগুলোর কৌশল এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। দৃশ্যত কংগ্রেস ধীরে ধীরে এনডিএ-বহির্ভূত শক্তির নিউক্লিয়াস হিসাবে তার মূল ভূমিকা হারাচ্ছে। এই নন-এনডিএ দলগুলো কিভাবে একত্র হয় তা দেখতে হবে। তারা কি এনডিএকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য নীতিভিত্তিক জোটকে অগ্রাধিকার দেয় নাকি তারা নেতৃত্বের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে? তারা যদি নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে শুরু হওয়ার আগেই তারা বিজেপির কাছে হেরে যেতে পারেন। একটি প্র্যাগম্যাটিক বিকল্পের আরো পরিমার্জিত বিকাশের জন্য বৃহত্তর রাজনৈতিক সাবলীলতা থাকা দরকার, তবে এর জন্য আরো বেশি রাজনৈতিক দক্ষতার প্রয়োজন হবে।

নেপাল: ক্ষমতার লড়াইয়ে নানা সমীকরণ
কয়েক দিনের রাজনৈতিক জল্পনা-কল্পনার পর, নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল একটি জোট সরকার গঠনে সক্ষম হয়েছেন। তার প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো জোট সরকার পরিচালনা করা যা নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি-ইউনিফায়েড মার্কসবাদী লেনিনবাদী এবং আরো কয়েকটি ছোট দলের ওপর নির্ভর করে গঠন করা হয়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি নতুন সরকারকে দেশের অর্থনীতি, বৈদেশিক নীতি ও পরিবেশসংক্রান্ত বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে।

নেপাল তার দুই নিকটতম প্রতিবেশী ও এশিয়ান শক্তি ভারত ও চীনের সাথে তার সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। তবুও, দেশের নেতৃত্বকে ‘ভারতপন্থী’ এবং ‘চীনপন্থী’ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এ ধরনের শ্রেণীকরণ মূলত নেতা ও দলের রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর ভিত্তি করে করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, নেপালি কংগ্রেসকে ‘ভারতপন্থী’ হিসাবে ট্যাগ করা হয়েছে যখন কমিউনিস্ট দলগুলোকে ‘চীনপন্থী’ হিসাবে গণ্য করা হয়। কিছু মতাদর্শগত পার্থক্য থাকা সত্তে¡ও, সব রাজনৈতিক দল ভারত ও চীনের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে প্রায় একই অবস্থানে রয়েছে। নেপালি কংগ্রেস বলেছে যে তারা ভারতের সাথে সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য ক‚টনৈতিক উপায় অবলম্বন করবে এবং নয়াদিল্লি ও বেইজিং উভয়ের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রাখবে। নির্বাচনী প্রচারণার সময়, অলি ভারতের সাথে সীমান্ত ইস্যুতে কিছুটা কঠোর ছিলেন, তবে ভারত ও চীন উভয়ের সাথে সুসম্পর্কের কথা বলেছেন।

ভারত ও চীন ছাড়াও, নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং বৈদেশিক বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশন (এমসিসি) নেপাল কমপ্যাক্ট ও স্টেট পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম (এসপিপি) কাঠমান্ডুকে ওয়াশিংটনের খুব কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। এমসিসির অধীনে, আমেরিকান সরকার অনুদান হিসাবে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। এমসিসির বিরোধীরা এটিকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মোকাবেলায় নেপালকে তার পাশে টেনে আনার জন্য মার্কিন ‘গ্র্যান্ড ডিজাইন’-এর অংশ বলে অভিযুক্ত করেছে। দীর্ঘ বিতর্কের পর, নেপালের পার্লামেন্ট ২০২২ সালের প্রথম দিকে এমসিসিকে অনুমোদন করে।

বর্তমান সরকারের ভাগ্য নির্ভর করছে কতটা চতুরতার সঙ্গে তারা জোটের শরিকদের একত্র রাখতে পারবে তার ওপর। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সবচেয়ে কঠিন ব্যক্তি হবেন অলি। যেহেতু প্রচণ্ড একজন পরীক্ষিত রাজনৈতিক নেতা। তার প্রধানমন্ত্রিত্বের অধীনে ক‚টনৈতিক সম্পর্কের অনেক উত্থান-পতন আছে। বৈদেশিক নীতিতে, প্রচণ্ডকে সম্ভবত একজন ‘চীনপন্থী’ নেতা হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে তবে তিনি কোনো বিষয়ে ভারত বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিরক্ত করবেন না। তার নেতৃত্বে নেপাল অবশ্যই নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার জন্য বৈদেশিক বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করবে।

মিয়ানমার: সর্বব্যাপী সঙ্ঘাতে বৈশ্বিক দ্বন্দ্বের ছায়া
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ২০২৩ সালে বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে এই নির্বাচনী মহড়া হলেও এটি, সম্ভবত দেশব্যাপী সঙ্ঘাতকে আরো বাড়িয়ে দেবে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পরে জারি করা জরুরি অবস্থার (এবং এর পর থেকে দুবার নবায়ন করা হয়েছে) মেয়াদ আগামী আগস্টে শেষ হবে।

মিয়ানমারে নির্বাচন আয়োজন আপেক্ষিক শান্তির সময়েও যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। এই নাটকীয় উদ্যোগ যা-ই হোক না কেন, এটি সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য একটি ‘প্রস্থান কৌশল’ বা শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টা বলে মনে হয় না। শাসক যেভাবেই কারসাজি করুক না কেন, মিয়ানমারের ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচনের দৃশ্যটি এর মাধ্যমে আয়োজন হতে পারে।

মিয়ানমার কার্যত এখন সামরিক জান্তা শাসিত এবং জাতীয় ঐক্য সরকার নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলে সমান্তরালভাবে বিভাজনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই বিভাজন ঠেকতে পারে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হলে। এটি ঘটতে পারে যদি বৈশ্বিক রাজনীতির দুই প্রধান পক্ষ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এটি চায়। পরস্পরবিরোধী প্রভাব বিস্তারে লড়াইরত এই দুই পক্ষ মিয়ানমারের বিষয়ে একই বিন্দুতে আসা সহজসাধ্য নয়। এটিকে আরো জটিল করেছে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন ২০২৩ সাল তাৎপর্যপূর্ণ বছর হবে মিয়ানমারের জন্য। কিছু তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনও দেখা যেতে পারে এ সময়ে।

দিগন্তে পুনরুদ্ধার?
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে বিশ্বব্যাপী মূল্যের ধাক্কা দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশকে বিশেষভাবে আঘাত করেছে। পূর্বে বিদ্যমান দুর্বলতার কারণে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার পর্যটন-নির্ভর অর্থনীতি থেকে শুরু করে পাকিস্তানে বছরের পর বছর অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনায় বাড়তি আঘাত হিসাবে কাজ করেছে এটি। অস্বচ্ছ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার কারণে এর কম বেশি প্রভাব বাংলাদেশেও দেখা গেছে। দক্ষিণ এশীয় সরকারগুলোকে অবশ্যই তাদের অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতে হবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ যত দিন চলবে তত দিন এটি করা কঠিন হবে।

কিছু দেশ উপসাগরীয় অঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের কাছ থেকে বর্ধিত রেমিট্যান্স প্রবাহের আশা করে। এসব দেশ ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী তেলের উচ্চমূল্যের কারণে উপকৃত হয়েছে। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নতুন প্যাকেজ চূড়ান্ত করা। পাকিস্তান আইএমএফের সহযোগিতা বজায় রাখতে চায়। ভারত সম্ভবত সস্তা রাশিয়ান জ্বালানি আমদানি করতে থাকবে আর পাকিস্তানও প্রথমবারের মতো এটি করতে চায় বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। এই অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকির বিষয়টি হলো এখানে বৈশ্বিক শক্তির মধ্যে কৌশলগত দ্ব›দ্ব সঙ্ঘাত ক্রমেই বাড়ছে। রাষ্ট্রসমূহের নেতৃত্ব কতটা পরিণামদর্শী নীতি ও কৌশল এ ক্ষেত্রে নিচ্ছে তার ওপর এই ঝুঁকি থেকে দেশের মানুষের রক্ষা পাওয়াটা অনেকখানি নির্ভর করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com