দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০২২ সালের মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামি শহরে বাংলাদেশ সরকারের ফ্লোরিডা কনস্যুলেট জেনারেল অফিস চালু করে বর্তমান সরকার। প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে স্বস্তি এলেও আস্তে আস্তে সেই আনন্দের খবরটি বিষাদে পরিণত হচ্ছে। অফিস চালু হলেও চালু হয়নি পাসপোর্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত ফ্লোরিডা কনস্যুলেট জেনারেল অফিসে মেশিন রিডেব্যাল পাসপোর্টের যন্ত্র পাঠানো হয়নি। আর তাতেই আটকে আছে পাসপোর্ট সংক্রান্ত সেবা। ফলে হাজার হাজার প্রবাসী বাঙালিকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমরা অন্য সব সেবা দিতে পারলেও পাসপোর্ট সংক্রান্ত কোনো কাজ করতে পারছি না।’
ইকবাল আহমেদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের আটটি অঙ্গরাজ্য এ কনস্যুলেটের অধীনে। যেখানে এক একটি অঙ্গরাজ্য বাংলাদেশের সমান। আমার এলাকার মধ্যে ১ লাখের বেশি বাংলাদেশি আছেন। এর মধ্যে অনেক ছাত্র রয়েছে, যারা এখনো বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী। তা ছাড়া যারা বিদেশি পাসপোর্ট হোল্ডার, তাদের নো-ভিসা দিতে পারছি, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে পারছি, জন্ম নিবন্ধন দিতে পারছি। এখন শুধু আটকে আছি পাসপোর্টের জন্য। যেটা হবে আমাদের আয়ের প্রধান ক্ষেত্র। পাসপোর্ট সেবা চালু করতে পারলে, প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার ডলার আয় করা সম্ভব হবে। যে টাকা আবার দেশেই পাঠাতে পারব।’
পাসপোর্ট সেবা ফি প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রতিটি পাসপোর্টের ফি ১২০ থেকে ১৫০ ডলার। আশাকরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশু সুদৃষ্টি দেবেন।’ পাসপোর্টে ইংরেজি নামের পাশাপাশি বাংলা যুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি জানান ফ্লোরিডাসহ যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের ১ লাখের উপরে বাঙালির বসবাস। তার মধ্যে ফ্লোরিডাতে ৫০ হাজার, জর্জিয়ার আটলান্টাতে আছে ৪০ হাজারের মতো। এ অঞ্চলের আটটি অঙ্গরাজ্য মিয়ামি কনস্যুলেট অফিসে থেকে সেবা নেয়। সেগুলো হচ্ছে অ্যালাবামা, আরকানসাস, লুইজিয়ামা, জর্জিয়া, সাউথ ক্যারালাইনা, টেনিসি। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নিউয়র্ক কনস্যুলেট জেনারেল অফিস দেখে আটটি অঙ্গরাজ্য এবং ২৬টি অঙ্গরাজ্য দেখে ওয়াশিংটন কনস্যুলেট অফিস। বর্তমানে প্রতিদিন ১৫ জন বাঙালি বিভিন্ন সেবা নিতে আসেন। পাসপোর্ট সেবা চালু হলে এ সংখ্যা বাড়বে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, বর্তমানে ফ্লোরিডা অঞ্চলের প্রবাসীরা ওয়াশিংটন ডিসিতে গিয়ে এ সেবা গ্রহণ করেন। কয়েক হাজার মাইল দূর থেকে গিয়ে সে সেবা গ্রহণ করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ বিষয়ে প্রবাসী বাঙালি ছালাম চাকলাদার আমাদের সময়কে বলেন, ‘মিয়ামিতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসটা পুরোপুরি চালু হলে আমাদের আর কষ্ট হতো না। এখন ওয়াশিংটন গিয়ে অনেক সময় দিনের কাজ দিনে সেরে আসতে পারি না। সেখানে গিয়ে হোটেল ভাড়া করে থাকতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি প্রবাসীদের এ কষ্ট দেখতেন, তা হলে আমাদের আর ওয়াশিংটন যেতে হতো না।’