যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি ও আলাবামায় স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ মার্চ) আঘাত হানে শক্তিশালী টর্নেডো। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
টর্নেডোর আঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিসিসিপির রোলিং পার্ক শহর। বলতে গেলে শহরটি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। শত শত মানুষের বাসস্থান পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। যত্রতত্র পড়ে আছে ধসে যাওয়া গাড়ি, ইট ও কাঁচের টুকরা। ওই শহরের এক বাসিন্দা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিনি তার বাথটাবে আশ্রয় নিয়ে কোনোমতে টর্নোডোর আঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
রোলিং পার্ক শহর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আশপাশে কিছুই হয়নি। পাশের শহর যারা আছেন তারা জানেনও না— তাদের প্রতিবেশি শহরের বাসিন্দাদের বাড়ি-ঘর সব ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া রোলিং পার্ককে ঘিরে যেসব সবুজ কৃষি জমি আছে, ওই জমিগুলোতেও টর্নেডোর কোনো ছোঁয়া লাগেনি। এমনিক বাতাসে গাছ গুলোও বেঁকে যায়নি। কিন্তু টর্নেডো যেসব বাড়ি-ঘরের ওপর দিয়ে গেছে, সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে।nসপ্তাহের শেষ দিন উপলক্ষ্যে যেসব বাড়িতে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনরা একত্রিত হয়েছিলেন সেগুলো মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, কাঠ দিয়ে যেসব বাড়ি-ঘর তৈরি করা হয়েছিল সেগুলো ছোট ছোট টুকরায় পরিণত হয়েছে। একটি ঘরের ভেতর উল্টে পড়ে আছে ওয়াশিং মেশিন। তবে এই ঘরে যে রান্না ঘর ছিল সেটির কোনো চিহ্ন নেই।
টর্নেডোটি আঘাত হানে মধ্যরাতে। ওই সময় মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন। ফলে কেউ টর্নেডো সম্পর্কে কোনো আগাম সতর্কতা পাননি। খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে— ঘুমন্ত বাসিন্দারা এমন ইঙ্গিত পেয়েছেন টর্নেডোর ভয়ানক শব্দ শুনে।
ফ্রান্সিসকো ম্যাকনাইট নামের এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেছেন, এটি অলৌকিক ঘটনা যে তিনি বেঁচে আছেন। ফ্রান্সিসকো আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে বাতাসের যে শব্দ তিনি শুনেছেন, এর আগে কখনো এমন ভয়ানক শব্দ শোনেননি; জীবনে আর কখনো শুনতে চান না। হতবিহ্বল হয়ে পড়ে তিনি নিজের বাথরুমের বাথটাবের কাছে গিয়ে আশ্রয় নেন। আর ওইখানে যাওয়াতেই বেঁচে যান তিনি। টর্নেডোর শক্তিশালী আঘাতে তার বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফ্রান্সিসকো নামের এই বাসিন্দা আরও জানিয়েছেন, টর্নেডোটি মাত্র ৫-১০ মিনিট স্থায়ী ছিল। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে অনেক মানুষকে বাস্তুহারা করে দিয়েছে এটি।