যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী স্যাক্রামেন্টোর পাশের শহর ডেভিসে এইচবিবি’র (Humanity Beyond Barrier; HBB) উদ্যোগে গত মার্চ ১৮ উদযাপিত হয়ে গেল বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। পরিবেশ ও মানবসেবামূলক প্রতিষ্ঠান এইচবিবি দেশাত্মবোধের টানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আয়োজন করে। একইসঙ্গে এইচবিবি’র বার্ষিক তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
‘স্বাধীনতা মেলা’ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল ৪টায় ভেটেরান মেমোরিয়াল সেন্টার থিয়েটারে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মেলার উদ্বোধন করেন এইচবিবি’র সাধারণ সম্পাদক আকীম কবীর। মেলায় বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবার, বই, দেশীয় শাড়ি, গহনা এবং বাংলাদেশের প্রতীক চিহ্নিত সুভেনির দোকান অংশগ্রহণ করে।
এইচবিবি’র পরিচালক জাওদাত হাসান রহমানের সার্বিক আয়োজনে স্বাধীনতা মেলা যেন উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার বাংলাদেশিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে স্বাধীনতার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ সময় উপস্থাপন করা হয় এইচবিবি’র গত এক বছরের কার্যক্রম। এতে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিসেস সিতারা খান এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আনিসুর রহমান মিলন। এইচবিবি ইয়ুথ ডিরেক্টর সায়মা শহীদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কিশোর-কিশোরীরা তাদের গত এক বছরের বিভিন্ন প্রকল্প উপস্থাপন করে।
দেশের জন্য কিছু করার তাগিদে মানুষকে আহ্বান জানানো এবং উৎসাহিত করার ইতিবাচক সময় হিসেবে স্বাধীনতার দিনটিকে বেছে নেওয়ায় এইচবিবি’র গ্রহণযোগ্যতা সবার কাছে সমাদৃত হয়ে উঠে। এ সময় এইচবিবি’র প্রেসিডেন্ট ড. শেখ সেলিম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এইচবিবি’র কোষাধ্যক্ষ এম এম আর মুকুল এইচবিবি’র সার্বিক কার্যক্রমের তথ্য উপস্থাপনে সহায়তা করেন।
পরিবেশ ও মানবকল্যাণে এইচবিবি ২০১৫ সাল থেকে আমেরিকা, এশিয়া এবং আফ্রিকার মহাদেশে কাজ করে আসছে। অতিমারির শুরু থেকে এই পর্যন্ত এইচবিবি গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম বিশ্বে প্রশংসিত হয়।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতি বছর এইচবিবি বৈচিত্র্যময় সেবামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। যেমন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের স্কুল তৈরি করে দেওয়া, উত্তরবঙ্গে শিশু সর্গ নির্মাণে সহযোগী হওয়া, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য যানবাহন তৈরি, করোনা আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ, পানি সরবরাহ, ঝুকিপূর্ণ হাসপাতাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জড়িত সেবাকর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা, সমাজের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সহায়তা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নতকরণে সহায়তা, দুস্থ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা প্রদানসহ বর্তমানে আরও বেশকিছু কার্যক্রম চলমান আছে।
এইচবিবি’র উল্লেখযোগ্য একটি কার্যক্রম হলো টেলিমেডিসিন। উক্ত প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন এইচবিবি’র পরিচালক ডা. হালিমা করিম। এইচবিবি’র আরও একটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হলো ছিন্নমূল পথশিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে ‘ছায়াতল বাংলাদেশ’। উক্ত প্রকল্পের কার্যক্রমের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. সৈয়দা কবির তুলি। বিভিন্নভাবে এইচবিবি থেকে এ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ সেবাগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় এক লাখ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ মানুষ।