আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটান থেকে আবারও শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। এ অবস্থায় সাবমেরিনটিকে শনাক্ত করতে চলমান তল্লাশি অভিযানের আওতা আরও বাড়ানো হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই নিখোঁজ সাবমেরিন সন্ধানে একটি এইচসি-১৩০ হারকিউলিস ফ্লাইট ৮৭৯ মাইল (১৪শ কিলোমিটার) এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এর আগে, গত মঙ্গলবার অনুসন্ধানের তৃতীয় দিনে কানাডীয় উড়োজাহাজ সাবমেরিন নিখোঁজ হওয়া এলাকায় পানির তলদেশে এক ধরনের শব্দ শনাক্ত করে। পরে তা যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ডকে জানানো হয়।
এদিকে, যাত্রাকালে সাবমেরিনটিতে যে পরিমাণ অক্সিজেন মজুত ছিল, তা দিয়ে ৯৬ ঘণ্টা পানির নিচে টিকে থাকা সম্ভব। সে অনুযায়ী, সাবমেরিনটির আরোহীদের আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ পাওয়ার কথা।
সেই হিসাবে, আর বড়জোর কয়েক ঘণ্টার অক্সিজেন রয়েছে টাইটানে। এই সময় পেরিয়ে গেলে ভেতরে থাকা পর্যটকদের জীবিত উদ্ধারের আশা প্রায় শেষই হয়ে যাবে।
এর আগে, গত রোববার আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপ দেখার জন্য পানির নিচে যাওয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর মাদার ভেসেল পোলার প্রিন্স থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় টাইটান। এরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।
১৯১২ সালে যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করে টাইটানিক। প্রথম সমুদ্রযাত্রায় মাঝপথে বিশাল বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায় তৎকালীন বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী জাহাজটি। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় দেড় হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
আটলান্টিক সাগরের যে এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ, সেটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে। সাগরের গভীরে এই ধ্বংসাবশেষটি দেখতেই ওশনগেট নামের একটি সাবমেরিনে চেপে রওনা হন চালকসহ মোট পাঁচজন।
যাত্রীরা হলেন- ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ওশনগেটের শীর্ষ নির্বাহী স্টকটন রাশ (৬১) ও সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেট (৭৭)।এই অভিযানে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক অভিযাত্রীর মাথাপিছু খরচ হয়েছে আড়াই লাখ ডলার।