রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে ‘নিষিদ্ধ’ ক্লাস্টার বোমা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে করে বেসামরিক মানুষের জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়বে বলে অনেকে আশঙ্কা করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন শুক্রবার ক্লাস্টার বোমা সরবরাহ করার বিষয়টি অনুমোদন করে বলে যে যুদ্ধে রাশিয়া যেসব বোমা ব্যবহার করছে, সেগুলোর চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী ক্লাস্টার বোমা অনেক বেশি নিরাপদ।
রাশিয়াকে প্রতিরোধ করার জন্য ইউক্রেন আরো বেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ দাবি করার প্রেক্ষাপটে এসব বোমা দেয়া হচ্ছে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা স্বীকার করছি যে ক্লাস্টার বোমা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে আমরা যত দিন পেরেছি, তা আটকে রেখেছি। তবে রাশিয়ার সৈন্যরা যদি ইউক্রেনের অবস্থানের দিকে ধেয়ে আসে এবং ইউক্রেনের আরো ভূমি দখল করে তবে ইউক্রেনের আরো বেসামরিক মানুষ বিপদে পড়বে।’
বাইডেন পরে সিএনএনকে বলেন, তার দিক থেকে এটা ছিল ‘খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত।’ তবে তিনি যুক্তি হিসেবে বলেন, ইউক্রেনের গোলাবারুদ শেষ হয়ে আসছিল।
পেন্টাগন জানিয়েছে, তারা এর পাশাপাশি সাজোয়া যান ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্রও ইউক্রেনে পাঠাচ্ছে।
অধিকার কর্মীরা বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, এর ফলে বেসামরিক নাগরিকদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়াশিংটন ডিরেক্টর সারাহ ইয়াগের মার্কিন পদক্ষেপকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে অভিহিত করেন।
উল্লেখ্য, প্রতিটি ক্লাস্টার বোমায় শত শত ছোট বিস্ফোরক থাকতে পারে। এগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে সবগুলোই বিস্ফোরিত হয় না। ডাড নামে পরিচিত অবিস্ফোরিত বোমাগুলো অনেক বছর ধরে মাটিতে থেকে যেতে পারে। ফলে বেসামরিক নাগরিকরা, বিশেষ করে শিশুরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
আন্তর্জাতিকভাবে ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ না হলেও বেশির ভাগ ন্যাটো সদস্যসহ ১২০টির বেশি দেশ এই বোমা ব্যবহার না করার কনভেনশনে সই করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেন এতে সই করেনি।
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেসের মুখপাত্র ফারহান হক শুক্রবার ক্লাস্টার বোমাবিষয়ক কনভেনশনের প্রতি জাতিসঙ্ঘপ্রধানের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন।
ন্যাটো সদস্য এবং ইউক্রেনের অন্যতম মিত্র জার্মানিও ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা না পাঠানোর অনুরোধ করেছে।
সূত্র : আল জাজিরা