দৈনন্দিন কর্মব্যস্ত এই জীবনে শরীর সুস্থ-সবল রাখতে আমরা কত কিছুই না করি।অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা, ধূমপান ও মদ্যপান না করা প্রভৃতি আরও অনেক কিছুই করেন। নিজেকে নানা নিয়মে বেঁধে রাখলে শরীর নিঃসন্দেহে সুস্থ থাকবে। তবে শুধু শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেই হবে না, মানসিকভাবেও নিজেকে ফিট রাখাটা জরুরি। তবেই সামগ্রিক সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে।
এ ক্ষেত্রে সন্ধ্যা ৭টার পর কয়েকটি অভ্যাসেই বদলে যেতে পারে আপনার জীবন। শুধু শরীর নয়, এই অভ্যাসগুলো যত্ন নেবে মনেরও। আসুন তাহলে দেখে নিন, সন্ধ্যার পর কোন কাজগুলো করা জরুরি-
ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি দূরে রাখুন
সারা দিন আমাদের চোখ আটকে থাকে ল্যাপটপ, ট্যাব বা মোবাইলে। এতে করে স্ক্রিন টাইমেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়। ফলে চোখে চাপ পড়ে, স্ট্রেস বাড়ে। এর খারাপ প্রভাব পড়ে আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর। তাই সন্ধ্যা ৭টার পর সমস্ত ইলেকট্রনিক যন্ত্র থেকে নিজেকে একেবারে দূরে রাখুন। যন্ত্রের সঙ্গ ছেড়ে নিজের মতো করে সময় কাটান। বই পড়তে পারেন, যোগাসন করতে পারেন, নিজের পছন্দের কাজ করতে পারেন। তাতে মন, মস্তিষ্ক এবং শরীর – সব কিছু সুস্থ এবং শান্ত থাকবে।
চোখ বন্ধ করে ভাবুন
সারাটা দিন কীভাবে কাটালেন, কী কী করলেন, সেই সব কিছু চোখ বন্ধ করে ভাবুন। ভালো-মন্দ প্রতিটা মুহূর্ত মনে করার চেষ্টা করুন। একাগ্র চিত্তে মুহূর্তগুলো ভাবলে অনেক ভুল, ত্রুটি, খারাপ লাগা, ভালো লাগার সন্ধান পাবেন। নিজের করা ভুলগুলো বুঝতে পারবেন। ফলে পরের দিন সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি আর হবে না।
আগামীকালের জন্য পরিকল্পনা করুন
পরের দিন কী কী করবেন, সেসব যাবতীয় পরিকল্পনা আগের দিনই ঠিক করে রাখতে পারেন। একটা তালিকা তৈরি করে রাখুন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন সময় কী করবেন, তা পরপর সাজিয়ে নিন। তাহলে সকালে ঘুম থেকে উঠেই দৌড়ঝাঁপ থেকে রেহাই মিলবে। তাড়াহুড়োয় অনেক সময় ঠিক করে খাওয়া হয় না, অফিস পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়, কাজ নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করা হয় না। যার ফলে মানসিক চাপ বাড়ে, অস্থিরতা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন এমন চলতে থাকলে শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা বাড়তে থাকে। এজন্য আগের দিনই কাজের পরিকল্পনা করাটা খুবই জরুরি।
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন
সারা দিনের কাজের চাপে প্রাণ ভরে শ্বাস নেওয়ারও সময় পাওয়া যায় না। ফলে স্ট্রেস, চিন্তা, উদ্বেগ বাড়তে থাকে। নিজের মনকে শান্ত করতে তাই সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরেই প্রাণ ভরে শ্বাস নিন। চাইলে মেডিটেশন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। তাতে মানসিক ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে, স্নায়ুতন্ত্র শান্ত থাকবে।
নিজের যত্ন নিন
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে শুরু হোক নিজের সময়। এই সময় নিজের যত্ন নিন। মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার সবচেয়ে বড় ওষুধ হলো নিজেকে সময় দেওয়া, নিজের ভালো-মন্দ নিয়ে ভাবা। তবেই তরতাজা অনুভব করবেন এবং নেগেটিভ চিন্তা দূর হবে। চাইলে ত্বকের ক্লান্তি তাড়াতে এই সময় রূপচর্চায়ও মন দিতে পারেন।