যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলোর হাসপাতালে ভ্যান্টিলেটারের অভাব প্রকট। এ কারণে করোনা ভাইরাসে অসুস্থ রোগীরা দ্রুত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। যাদের অবস্থা সংকটজনক তাদের ভ্যান্টিলেটারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘসময়। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হয়। অনেকের দম বন্ধ হয়ে আসে। এমনি অবস্থায় রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহকারী ভ্যান্টিলেটার দিয়ে সুস্থ রাখার চেষ্টা করা হয়। প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী বাড়ছে বলে তাদের ভ্যান্টিল্যাটার সরবরাহ করা অপ্রতুল হয়ে গেছে। ভ্যান্টিলেটারের অভাবের কারণে হাসপাতালগুলোতে মৃত্যুর হার বাড়ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্তও করা যাচ্ছে না। নিউইয়র্ক শহরে আজ (২৪ মার্চ) অব্দি করোনা ভাইরাসে মারা গেছে ১৩১জন।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্ণর এন্ড্রু কুমো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ৩০ হাজার ভ্যান্টিলেটার চেয়েছিলেন। ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে তিনি পেয়েছেন মাত্র ৪০০ ভ্যান্টিলেটার। গভর্ণর কুমো এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রিতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মিডিয়ায়। আজকের হিসাব অনুযায়ী নিউইয়র্ক শহরের হাসপাতালগুলোতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রাগীর সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি। তাদের জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ১২ হাজার ভ্যান্টিলেটার। কিন্তু ভ্যান্টিলেটারের অভাব পূরণ হচ্ছে না। চাহিদার তুলনায় চিকিৎসা সরঞ্জাম উদ্বেগজনকরকম কম হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে মুমূর্ষ রোগী ছাড়া এখন ভর্তি করা হচ্ছে না। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অনেককে নিজ বাসায় অন্তরীণ থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ফেডারেল সরকার থেকে প্র্রাপ্ত ৪ শ’ ভ্যান্টিলেটারের মধ্যে ১০০টি সিটি হাসপাতাল এবং ৩০০টি বেসরকারি (প্রাইভেট) হাসপাতালে হস্তান্তর হয়েছে। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্ণর মিঃ কুমো এবং নিউইয়র্ক সিটির মেয়র মিঃ ব্লাজিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মিঃ ট্রাম্পের কাছে আরো ভ্যান্টিলেটার পেতে ধর্ণা অব্যাহত রেখেছেন। তাই নিউইয়র্কে বসবাসকারীদের সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, তারা যেন নিজ বাসাতে নিরাপদে থাকতে পারেন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গেলেই যথাযথ চিকিৎসা পাবেন এবং সুস্থ হয়ে যাবেন, এমন নাও হতে পারে।
আজ মারা গেলেন আরো ৩ বাংলাদেশি
আজ (২৪ মার্চ) নিউইয়র্কে আরো ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গেছে। তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদিন এটিএম সালাম নামে এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। তার বয়স ৬৮। রংপুর জেলায় তার বাড়ি। লং আইল্যান্ডে বাস করতেন।
নিউইয়র্ক শহরের এলাহাস্টে বসবাকারী নূরজাহান বেগম নামে একজন বাংলাদেশি নারী মারা গেছেন নিকটস্থ হাসপাতালে। তার বয়স হয়েছিল ৭০। তার বাড়ি ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায়। তিনি জ্যাকসন হাইটসে পাকিস্তানী মালিকাধীন একটি রেষ্টুরেন্টে কাজ করতেন। এ ছাড়া এদিন ব্রুকলিন এলাকায় ৪২ বছর বয়স্ক একজন বাংলাদেশি নারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ নিয়ে ৮ জন বাংলাদেশি মারা গেলেন নিউইয়র্কে।