প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার বলে পরিচিত শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ী নৌ-রুটে লঞ্চ ও সি-বোট চলাচল বন্ধ করে দেয় বিআইডব্লউিটিএ কর্তৃপক্ষ।
এরপর বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় একসময়ের ঘাটের চিরচেনা রূপই যেন পাল্টে যায়। কিন্তু রোববার দিনব্যাপী লোকজনের সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি ফেরিতেই ঠাসাঠাসি করে লোকজন উঠেছে পারাপারের জন্য। এই সুযোগে অতিরিক্ত যাত্রী ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে দেদারছে!
তবে জরুরি পরিসেবার জন্য বিআইডব্লিউটিসি এ নৌ-রুটে সীমিত পরিসরে ফেরী পরিচালনা করায় শিমুলিয়া ঘাটে ছোট গাড়ি ও যাত্রীদের চাপ বেড়েই চলছে। আর এ সুযোগে ফেরি ঘাটে লুজ যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ২৫ টাকা ভাড়ার স্থলে জনপ্রতি ৩০ টাকা করে ভাড়া আদায় করছে ফেরি ঘাটের টিকিটিং এজেন্ট মেসার্স সামিউল এন্টারপ্রাইজের লোকজন। এ সময়ে টিকিট শেষ হওয়ার অজুহাতে এ নৌ-রুটের বিভিন্ন লঞ্চের ৩০ টাকা লেখা টিকিট ধরিয়ে দিচ্ছে ফেরিতে পারাপার হওয়া যাত্রীদের হাতে।
এ ব্যাপারে মেসার্স সামিউল এন্টারপ্রাইজের মালিক নেসার উদ্দিন ওরফে নাসিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। আর আমাদের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। করোনার কারণে নতুন টিকিট ছাপাতে পারছি না। তাই লঞ্চের টিকিট দেয়া হচ্ছে।
এদিকে শিমুলিয়া ঘাটে দেখা যায়, ঢাকা থেকে প্রাইভেটকার, অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেলে করে বিপুলসংখ্যক যাত্রী ঘাটে আসছে প্রতিনিয়ত। আর এসব যাত্রী লঞ্চ, সি-বোট ও ট্রলার না পেয়ে ফেরিতে করে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে।
এ সময়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘাটে দায়িত্বরত টিসির কয়েকজন সাথে কথা হলে তারা বলেন, যেখানে এ ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে, সেখানে ফেরি ঘাটে যাত্রীরা অবাধেই চলাচল করছে। আর মাঝে মাঝে লুজ টিকিট কাটা লোকজন ভাড়া কাটার বিষয়ে যাত্রীদের গায়ে হাত দেয়ার ঘটনাও ঘটছে।
এ ব্যাপারে মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ীর ইনর্চাজ পুলিশ পরিদর্শক মো: সিরাজুল কবিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নৌ-পুলিশ সদস্যদের বলা হয়েছে কেউ যেন সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে।
এ বিষয়ে শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহম্মেদের সেল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলে দিচ্ছি।