খেতে বসে প্রতি লোকমার সঙ্গে এক কামড় কাঁচা মরিচ। ভাবলেই যেন জিভে পানি এসে যায়। এমনকি পুরি-সিঙারার মতো ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের সঙ্গেও কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজ ছাড়া অনেকের চলেই না।
অনেকে আবার ঝালের ভয়ে কাঁচা মরিচের ধারে কাছেও ঘেষেন না। তাদের ধারণা, ঝাল খেলে শরীরের ক্ষতি হয়। আসলেই কি তাই? পুষ্টিবিদরা কিন্তু বলছেন ঠিক উল্টোটা। তাদের মতে, কাঁচা মরিচ পুষ্টিগুণে ভরপুর। হাই কোলেস্টেরলসহ একাধিক জটিল সমস্যার সমাধান।
চলুন তবে আর দেরি না করে কাঁচা মরিচের চমকে দেওয়া কিছু গুণের কথা জেনে নিই। তারপর থেকে হয়তো আপনি প্রতি বেলার খাবারের সময় পাতে অন্তত একটি হলেও কাঁচা মরিচ রাখবেন। তাতেই ফিরবে আপনার স্বাস্থ্যের হাল।
হাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে
কাঁচা মরিচ শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এই কোলেস্টেরলের কারণেই ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, হাই প্রেসারসহ একাধিক জটিল রোগ পিছু নেয়। এসব রোগ হটাতে কাঁচা মরিচ খুবই কার্যকর। তাই উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলে ভুক্তভোগীরা নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেতে ভুলবেন না।
ভিটামিনের ভান্ডার
কাঁচা মরিচে বেশ অনেকটা পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। যার ফলে হাড়, দাঁত ও মিউকাস মেমব্রেনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি-এর পরিমাণও কাঁচা মরিচে বেশি থাকে। তাই ত্বকের নানা সমস্যা নিরাময় করতে পারে সহজেই। মুখে বলিরেখাও পড়তে দেয় না।
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর
কাঁচা মরিচ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের ভান্ডার। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। সংক্রমণজনিত জ্বর, সর্দি-কাশি থেকে বাঁচায়। কাঁচা মরিচের মধ্যে রয়েছে ক্যাপসাইসিন, যা দেহের কোষ নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে।
বিপাকহার বাড়িয়ে তোলে
কাঁচা মরিচ খেলে দেহে এক ধরনের তাপ উৎপন্ন হয়, যা বিপাকহারের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। শরীরের বাড়তি মেদ ঝরাতে এবং ক্যালোরি বার্ন করতেও সাহায্য করে কাঁচা মরিচ। এর ফলে নিয়ন্ত্রণে থাকে শরীরের ওজন।
ব্যথা কমায়
কাঁচা মরিচে রয়েছে ক্যাপসাইসিন, যা প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে। মাইগ্রেন এবং আর্থ্রাইটিসের ব্যথাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে কাঁচা মরিচ।
হজমে সাহায্য করে
কাঁচা মরিচ খাবার হজমে মহৌষধের মতো কাজ করে। খুব তেল-মশলার রান্নায় গুঁড়া মরিচের পরিমাণ কমিয়ে দিন। কারণ, এই মরিচ খাবারের রং, স্বাদ বাড়ালেও হজমে সমস্যা করতে পারে। কিন্তু কাঁচা মরিচ হজমে সাহায্য করে। তাই ঝালের নিয়ন্ত্রণেই হজমের ক্ষমতা সক্রিয় রাখুন।
বন্ধ নাক খুলতে
ঠাণ্ডা লেগে সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। এই পরিস্থিতিতে গরম পানির ভাপ নেওয়ার সময় হাতে না থাকলে কাঁচা মরিচের ঘ্রাণ নেওয়া যেতে পারে। এতে চটজলদি বন্ধ হওয়া নাক খুলতে দারুণ সাহায্য করবে।
সে কারণে রান্নায় শুকনা গুড়া মরিচের পরিবর্তে কাঁচা মরিচ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। এছাড়া সালাত হিসেবেও কাঁচা মরিচ খাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই, বরং এর পুষ্টিগুণ আরও ভালো ভাবে পাওয়া যায় বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।