কারাগারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-জুলুম চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ঢাকা অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির তিন দিনের আজ প্রথম দিন ছিল। প্রথম দিনে বিভিন্ন ঘটনা ও নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জানান দিয়েছে জনগণ ও জনশক্তি এই স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে নেই। অবৈধ সরকার রাষ্ট্রকে হাতের কব্জায় নিয়েছে। আর এটা নিতে গিয়ে জনগণকে ত্যাজ্য করেছে। জনগণকে ত্যাজ্য করেই তারা গণতন্ত্রের শক্তির ওপর জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে। বিশেষ করে কেরানীগঞ্জ কারাগারে যেভাবে অত্যাচার, জুলুম চালাচ্ছে, নেতাকর্মীদের আত্মীয়-স্বজন দেখা করে এসে নির্মম নির্যাতনের যে বর্ণনা দিচ্ছে, তাতে মানুষের হৃদয়কে নাড়া দিচ্ছে। তারা এই ধরনের কার্যক্রম করে বাংলাদেশ থেকে বিরোধী দলের শক্তি ধ্বংস করার সকল পরিকল্পনা আয়োজন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ওরা পাল্টা আক্রমণের মধ্যেও কোনো অসভ্য শব্দ খুঁজে পায় না। তারা খুঁজে পায় সমস্ত ধরনের অসভ্যতা। তারা বানরের ভাগ-বাঁটোয়ারার যে নির্বাচন করছে, তার মতোই তারা এখন বাঁদরামি করছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধী দলের ওপর তারা এমন অসভ্য আচরণ করছে।’
নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা দুঃশাসনের মাফিয়া চাকরের মতো আস্ফালন দেখাচ্ছে। তারা নির্বাচনী মাঠ একপক্ষীয় করার জন্য কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে, প্রথম পদক্ষেপ হলো বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে ভয় দেখানো সাজানো মিথ্যা মামলা দেয়া এবং পূর্বপরিকল্পিত নাশকতা করে সেগুলোর মধ্যে নেতাকর্মীদের নাম ঢুকানো। এরপরও যদি বিরোধীদলকে দমন না করা যায় তাহলে কারাগারে অসুস্থ নেতাকর্মীদেরকে চিকিৎসা না দিয়ে মেরে ফেলা। মিছিলের মধ্যে গুন্ডা আওয়ামী লীগের ক্যাডার লেলিয়ে দিয়ে একভাবে মেরে ফেলা হচ্ছে। পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। জেল কাস্টডিতে প্রতিদিনই মৃত্যুর হার বাড়ছে। আমরা এগুলো প্রতিদিনই বলছি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে এগুলো কোনো সাজানো গল্প নয়।’
রিজভী বলেন, ‘মানুষের সর্বশেষ আশা-ভরসার আশ্রয়স্থল হচ্ছে আদালত। সেই আদালতেও এখন সঠিক বিচার পাওয়া যাচ্ছে না। এটা এই জাতির জন্য এদেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, “প্রতিদিনই পরিকল্পিতভাবে নাশকতা করছে আওয়ামী লীগ আর নাম দিচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। ১৩, ১৪, ১৫ সালের মতো যেখানেই নাশকতা হয়েছে সেখানে প্রথম ধরা পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বা যুবলীগ-ছাত্রলীগ। ২০১৫ সালে যখন নাশকতা করে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম দেয়া হয়েছিল তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন বলেছিল যে ‘ঘটনা ঘটাই আমরা আর নাম হয় বিএনপির’। এগুলোর সব তথ্য-প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।”
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অস্ত্র সংগ্রহ করছে বিএনপির কর্মসূচির মধ্যে আক্রমণ করার জন্য।’