দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই বসানো হয়েছে পদ্মা সেতুর ২৮তম স্প্যান। এতে সেতুর ৪ হাজার ২০০ মিটার দৃশ্যমান হলো। আর বাকি থাকল মাত্র ১৩টি স্প্যান।
আজ শনিবার সেতুর ২০ ও ২১ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। পিলার দুটির অবস্থান মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও মাদারীপুরের শিবচরে।
এর আগে গত ১ এপ্রিল শতভাগ শেষ করা হয় পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলারের কাজ। সেতুর ২৬ নম্বর পিলারটির কংক্রিটিংয়ের কাজ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় সব পিলারের নির্মাণ কাজ।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে সব পিলারের কাজ শেষ করাকে পদ্মা সেতুর ইতিহাসে অন্যতম অর্জন বলে মনে করেন প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বেশির ভাগ অংশই দৃশ্যমান এখন দেশের মেগা প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর। তবে কাজের বর্তমান অবস্থা আশা জাগানিয়া হলেও কোনোভাবেই সহজ ছিল না শুরুটা।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে শুরুর পর কাজের অগ্রগতি হোঁচট খায় নকশা জটিলতায়। ২২টি পিলারের নিচে মাটির গঠনগত জটিলতা দেখা দিলেও আশা ছাড়েননি প্রকৌশলীরা। দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত দেড় বছর পর নতুন নকশায় শুরু হয় জটিলতায় থাকা পিলারগুলোর কাজ। সে কাজও শেষ হলো অবেশেষে। পরিকল্পনা ছিল এপ্রিল মাসের মধ্যে সব পিলারের কাজ শেষ করা হবে। প্রকৌশলগত পিপিই’র পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত পিপিই ব্যবহার করে আগেই নিশ্চিত করা হয় সুরক্ষা।
এর আগে গত ১৭ মার্চ শেষ করা হয়েছিল ৪১তম পিলারটির কাজ। একসঙ্গে সব পিলারের নকশা সমাধান হলেও ধারাবাহিকতা রক্ষায় একটির পর একটির কাজ শেষ করা হয়।
এ ব্যাপারে পদ্মা বহুমুখী সেতু’র প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ২২টি পিলারের কাজ একই পদ্ধতিতে করা হয়েছে। বেশির ভাগ পিলারের সমাধান এক সিস্টেমেই এসেছে। এর ফলে মূল সেতুর ৪২টি, সড়ক থেকে সেতুতে উঠার ৮৯টি এবং রেল লাইনের ১৪টি, সব মিলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ১৪৫টি পিলারের সবগুলোর নির্মাণ কাজই শেষ হলো।
এর আগে গত ২৮ মার্চ সকালে পদ্মা সেতুর ২৭তম স্প্যানটি বসানো হয়। এতে স্প্যানটি বসানোর পর দৃশ্যমান হয় সেতুর ৪ হাজার ৫০ মিটার।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নদীর মধ্যে ২৭ ও ২৮ নম্বর পিলারের উপর বসানো হয়েছে স্প্যানটি। এখন আর বাকি রয়েছে ১৪টি স্প্যান বসানোর কাজ। এর আগে গত ১০ মার্চ ২৬তম স্প্যানটি বসানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন।’