কারাগার এখন গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পরে সরকার নতুন দুরভিসন্ধিতে লিপ্ত রয়েছে। আবারো তারা টার্গেট করেছে জিয়া পরিবারকে। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে বা কব্জায় নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচারের গোলক ধাঁধায় শুরু করেছে বানোয়াট প্রোপাগান্ডা। অপপ্রচার আর মিথ্যার পুরনো কাসুন্দি ব্যবহার করছেন নিরন্তরভাবে। নিজ দলের লুটপাট, সম্পদ পাচার, দখল, রাতারাতি কোটিপতি হওয়ায় নেতাদের গল্প যে আলিফ লায়লার গল্পকেও হার মানাচ্ছে, তা সরকার পরিকল্পিতভাবে এড়িয়ে যায়। এই রমজানে ক্ষুধার্ত ক্ষুব্ধ মানুষের হাহাকারের এসওএস বার্তা সরকার কি শুনতে পায়? নিমজ্জমান মানুষের অনুচ্চারিত যন্ত্রণাকে পাত্তা দেয় না ডামি সরকার।’
তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর তারা দেশ ও দেশের জনগণকে মহাসঙ্কটে ফেলে একটি মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করছে। সেটি হলো বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা। আর তাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিয়ে, উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে জীবন বিপন্ন করার পাশাপাশি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ক্রমাগত কুৎসা রটিয়ে তার ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ক্ষমতাবিলাস, দুর্নীতির ওপর জেনারেল লাইসেন্স, যাদের একজন মন্ত্রীর বিদেশে দুই শ’ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি থাকা, এছাড়াও দেশের সম্পদের বিরাট অংশ দুবাই, কুয়ালালামপুর, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার পাচার করা, ছাত্রলীগের সীমাহীন চাঁদাবাজির কারণে মানুষের ঘরবাড়ি তৈরি করা বন্ধ, এর ওপর তাদের আইনের শাস্তি থেকে রেহাই দেয়ার বিষয়ে প্রমাণিত হয় দেশ চলছে লুটতরাজ। ডামি সরকার গৃহস্থের বদলে চোরের পাহারায় অধিক ব্যস্ত। কই এগুলো নিয়ে প্রতিবেদন করতে তো কোনো সংবাদপত্রকে সাহসী হতে দেখি না। বর্তমান সরকার ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, বরং ইতিহাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এটি নিশ্চয়ই সংবাদপত্রগুলোর মনে থাকার কথা। সুতরাং এখন যারা সরকারের রুদ্র শাসনের মুখপাত্র হয়েছেন, ইতিহাস এদের ক্ষমা করবে না। অসত্য কখনোই টিকে থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে এটি প্রমাণিত যে বর্তমান সরকারের অপর নাম সিন্ডিকেট আর লুটপাট। কোনো কিছু সামাল দিতে না পেরে সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এখন ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ইফতার অনুষ্ঠান ভাঙার কর্মসূচিতে। যখনই তারা ক্ষমতায় আসে তখনই তারা মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানে এবং আলেম সমাজের ওপর নিপীড়ন নেমে আসে।’
রিজভী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা ও সবধরনের অনুষ্ঠান বিদ্যমান রয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে নেতাদের সাড়ম্বর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে অথচ ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা ও হামলা, এটা কি গভীর চক্রান্তের অংশ? সরকার তাদের স্বার্থে কখনো ইসলামকে ব্যবহার করে, আবার কখনো ছুঁড়ে ফেলে দেয়। দেশবাসী ভোট-পার্লামেন্ট হারিয়েছে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন হারিয়েছে, শেষমেষ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা নিজেদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধও হারাতে বসেছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, অধ্যাপক ড মামুন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা অধ্যাপক ইমতিয়াজ বকুল, সাবেক ছাত্রদল নেতা এজমল হোসেন পাইলট, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।