অবশেষে কক্সবাজারের পেকুয়ায় অপহৃত আট বছরের শিশু আরাফাতের লাশ মগনামা ইউনিয়নের ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ। সেইসাথে ভয়ঙ্কর হত্যা রহস্যও উদঘাটিত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও থানাসূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের কাদিমাকাটা এলাকা থেকে দুপুর ১২ টায় মাদরাসা থেকে আসার পথে নিখোঁজ হয় শিশু আরাফাত। নিখোঁজের ৪৮ ঘন্টা পর ধৃত আসামির স্বীকারোক্তি মতে মগনামা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড়ের মহিউদ্দিন মাঝির ধানক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: কামরুল আজম।
আরাফাত ওই এলাকার ওমান প্রবাসী রুহুল কাদেরের শিশুপুত্র। সে ফাঁসিয়াখালী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ১ম শ্রেণীর ছাত্র এবং তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট।
থানাসূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে শিশুটিকে অপহরনের পর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে অপহরণকারীরা আরাফাতের মায়ের মোবাইলে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে বিষয়টি অপহৃত শিশু আরাফাতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জানানোর পর পেকুয়া থানা পুলিশ মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে নিহত আরাফাতের আপন খালাত ভাই রায়হান (১৫) ও তার বন্ধু মানিককে (১৯) আটক করে। আটক রায়হান উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের দরদরি ঘোনা আবু তাহেরের পুত্র ও মানিক (১৯) একই একই এলাকার মিয়াজি পাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুত্র।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম জানান, “আসামিরা প্রথমে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিলেও সন্ধ্যার দিকে স্বীকার করে যে, তারা চাঁদা না পেয়ে আরাফাতকে গলাটিপে হত্যা করে রাতের আঁধারে মগনামার একটি ধানক্ষেতে ফেলে দেয়। পরে আসামিদের স্বীকারোক্তিমতে মগনামা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের জনৈক মহিউদ্দিন মাঝির ধানক্ষেত থেকে শিশু আরাফাতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।”
পুলিশের ধারণা, অপহরণকারীরা মুক্তিপন চাওয়ার পরপরই পুলিশের তৎপরতা ঠের পেরে নিজেদের বাঁচাতে তারা শিশু আরাফাতকে গলা টিপে হত্যা করে লাশ ধানক্ষেতে ফেলে দেয়।
নিহত আরাফাতের মা রুজিনা আক্তার পুতুল বিলাপ ধরে সাংবাদিকদের বলেন, “আমার ছেলে মাদরাসা থেকে এসে বাসায় বই রেখেই খেলতে চলে যায়। পরে তাকে দুপুরের ভাত খেতে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সন্ধ্যায় একটি ফোন আসে। তারা ফোন করে আমাকে জানায়, আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে এবং ১০ লাখ টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে।”
নিহতের স্বজন এহসান জানান, অপহরণকারীদের ফোন পাওয়ার সাথে সাথে বিষয়টি আমরা থানাকে অবহিত করলে থানাপুলিশ মোবাইল ট্রেকিং করে আসামিদের অবস্থান সনাক্ত ও তাদেরকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে তাদের স্বীকারুক্তিমতে আরাফাতের লাশ উদ্ধার করা হয়।