ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়ক অবরুদ্ধ রাখে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পরে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সোয়া ৩টার পর মহাসড়ক থেকে গাছের গুড়ি ও জ্বলন্ত টায়ার অপসারণ করার পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে, সকাল ৯টার দিকে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের রেলগেটে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রথমে মানববন্ধন করে। পুলিশ তাদের হটিয়ে দিতে গেলে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে। সকাল ১০ টা থেকে তারা মহাসড়কের মরিচের বাজার থেকে আড়কান্দি পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বিভিন্ন স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে।
খবর পেয়ে মধুখালী থানার পুলিশের সাথে ফরিদপুর থেকে এপিবিএন, র্যাব ও বিজিবি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দুপুর সোয়া ২টার দিকে প্রথমে যান চলাচলের চেষ্টা করা হলে আবার মরিচের বাজারে মহাসড়কে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় আড়কান্দিতে পুলিশ, এপিবিএন ও বিজিবি রাস্তা থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে যান চলাচল করতে গেলে সেখানে মহাসড়কের ঢালে লুকিয়ে থাকা বিক্ষুব্ধরা ঢিল ছুঁড়তে থাকে। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে হটিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ১০টা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার জুড়ে যানজট তৈরি হয়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
এ ঘটনায় ১৫ জনেরও বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকজন শটগানের গুলিতে আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অনেক পুলিশ ইটপাটকেলে আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনী কাজ করছে।
জানা গেছে, পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৯টার দিকে মধুখালী রেলগেটে মানববন্ধনের ডাক দেয়া হয়। স্থানীয় সর্বসাধারণের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি পালনে সেখানে জনতা সমবেত হতে থাকলে পুলিশ তাদের হটিয়ে দেয়। এ সময় সমবেতরা একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে মালেকা চক্ষু হাসপাতালের সামনে, কামারখালী ব্রিজের অদূরে মাঝিবাড়িতে ও বাগাটের ঘোপঘাটসহ বিভিন্নস্থানে অবস্থান নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিক্ষুব্ধরা মহাসড়কে উঠে অবস্থান নিতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এরপর মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে গাছের গুড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে তারা।
এ ব্যাপারে জানতে পুলিশের একাধিক দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।