সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে।
বুধবার (৫ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) সাইফুজ্জামান জামান।
এর আগে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহম্মদের স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে।
এতে আরো বলা হয়, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা ব্যবস্থা আগের মতোই বহাল থাকবে।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে এতদিন ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
পরিপত্রে বলা হয়, ‘সরকার সকল সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ জারি করা কোটা পদ্ধতি সংশোধন করল।’
কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের একটি প্ল্যাটফর্ম ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এরপর কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেয় সরকার।
ওই কমিটি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা সম্পূর্ণ তুলে দেয়ার সুপারিশ করে, যা মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।
এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
এ প্রেক্ষিতে ওই রিটের শুনানি নিয়ে কোটা বাতিলের পরিপত্র কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।