মারুফ হোসেন। নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানায় কাজ করেন। বাড়ি বরিশালে। থাকেন চিটাগাং রোডের পাশে সিদ্ধিরগঞ্জে। কয়েক দিন ধরেই জ্বর-সর্দি-কাশি। এই উপসর্গ নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে নিজের স্বাস্থ্যের পরীক্ষার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তিন দিন আগে চলে আসেন ঢাকায়। যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তার করোনা পরীক্ষা হয়।
গত সোমবার পরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার তিনি আবার ওই হাসপাতালে যান পরীক্ষার রেজাল্টের জন্য। তাকে বলা হয় মহাখালী থেকে তাকে রেজাল্ট দেয়া হবে। তিনি যান মহাখালীতে। কিন্তু কোনো ফলাফল না পেয়ে বাসায় চলে যান। মঙ্গলবার রাতে জানতে পারেন তিনি করোনা পজেটিভ।
মারুফ জানান, তিনি তার আরো কয়েক বন্ধু মিলে একটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন। তার করোনা পজেটিভ শুনে বাড়িওয়ালা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তার অন্য বন্ধুরা তাকে জানিয়ে দেয় কোনো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকার জন্য।
মারুফ জানান, গতকাল বুধবার সকালে তিনি আবার ঢাকায় এসে কুর্মিটোলা হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানে তাকে ভর্তি নেয়া হয়নি। সেখান থেকে তাকে বলে দেয়া হয় মুগদা জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য।
মারুফ গত রাতে জানান, কুর্মিটোলা থেকে কখনো হেঁটে আবার কখনো রিকশায় তিনি এসে পৌঁছেন মুগদা হাসপাতালে। রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত হাসপাতালের গেটে বসেছিলেন মারুফ। সেখান থেকে তাকে কোনো চিকিৎসাও দেয়া হয়নি। হাসপাতাল থেকে তাকে বলা হয়েছে বাসায় বসে চিকিৎসা নিলেই চলবে।
গতরাতে মোবাইল ফোনে মারুফ জানান, তিনি বুঝতে পারছেন না কোথায় যাবেন। বাড়িওয়ালা ও ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দাদের জন্য তিনি বাসায়ও যেতে পারবেন না। আবার হাসপাতালেও তাকে ভর্তি নেয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত এক জায়গায় থাকার জন্য মোটামুটি ম্যানেজ করেছেন। কিন্তু সেখানেও থাকা যাবে কি না নিশ্চিত নন মারুফ।
মোবাইলে মারুফ বলেন, সবকিছুই এখন অনিশ্চিত! গ্রামের বাড়ি যাবেন তারও কোনো উপায় নেই। তিনি কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। রাত ৮টার দিকে তার সাথে যখন কথা হয় তখন তিনি ঢাকা থেকে আবার সিদ্ধিরগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন।