দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যাদুর্গতের সহায়তা করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল লক্ষ করা গেছে।
আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো এ ত্রাণ গ্রহণ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে টিএসসির ফটকে স্থাপিত বুথে ত্রাণ সংগ্রহ শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেখানে মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে, কেউ ভ্যানে করে, কেউ ছোট ট্রাকে করে ত্রাণ নিয়ে আসতে থাকেন। বুথে থাকা শিক্ষার্থীরা দাতার নাম ও পণ্যের বিবরণ লিখে রাখছিলেন খাতায়। বেলা গড়াতে টিএসসিতে ত্রাণ দিতে আসা মানুষের ঢল নামে। সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ সংগ্রহের কাজ করতে শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যান।
ত্রাণ নিয়ে আসা বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগমে বিকেলের দিকে টিএসসি এলাকা ছিল লোকারণ্য। টিএসসির ফটকে বুথ সামলাতে হিমশিম খান শিক্ষার্থীরা। কেউ বোতলজাত পানি ও খাওয়ার স্যালাইন, কেউ মুড়ি-চিড়া, কেউ বিস্কুট, আবার কেউ খেজুরসহ বিভিন্ন শুকনা খাবার নিয়ে আসেন। স্বেচ্ছাসেবক ছাত্র-ছাত্রীরা সেগুলো হাতে বা কাঁধে করে টিএসসির অভ্যন্তরীণ ক্রীড়াকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়ায় নিয়ে জমা করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই উদ্যোগে অনেকে নগদ অর্থ দিয়েও শরিক হন। বুথে বসা ছাত্রীরা খাতায় অনুদানের অঙ্ক লিখে টাকা জমা রাখেন।
বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিএসসিতে শুধু নগদ অর্থ জমা পড়েছে ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ২৭২ টাকা। ত্রাণের পরিমাণও বিপুল। টিএসসির ক্রীড়াকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়া বিশাল ত্রাণভান্ডারে পরিণত হয়েছে। ত্রাণ প্যাকেটজাত করার কাজও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা ত্রাণ নির্ধারিত বস্তায় ভর্তি করছেন। রাতে ট্রাকে করে সেগুলো পাঠানো হবে দুর্গত এলাকায়।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী জমা পড়ে। সেইসাথে জমা হয় ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৩ টাকা। দিনভর ত্রাণ সংগ্রহের পর রাতে কয়েকটি ট্রাকে করে সেগুলো দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়।
এদিকে, বন্যায় আটকেপড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে অংশ নিতে গতকালই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা ২০০টি স্পিডবোটে করে দুর্গত এলাকায় গেছেন বলে আন্দোলনের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সদস্য আবদুল্লাহ সালেহীন জানিয়েছেন।