ঢাকার আশুলিয়ায় ভ্যানে লাশের স্তুপের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এডিশনাল এসপি ও ডিএসবি কর্মকর্তার সমন্বয়ে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া ঘাতকদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে আশুলিয়া থানা পরিদর্শন শেষে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ।
পুলিশ সুপার বলেন, যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আমাদের নজরে এসেছে। আমাদের জায়গা থেকে যা করণীয় তা আমরা করছি। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করছেন। আমরা সবার সহযোগিতায় পেয়ে গেছি কারা কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত, কারা উপস্থিত ছিলেন। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য নামগুলো প্রকাশ করছি না। খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের সামনে প্রকাশ করা হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, যেগুলো ভিডিওতে এসেছে সেগুলো দেখেছি, তবে ফিজিক্যাল এভিডেন্স এখনো পাইনি। এগুলো নিয়েও আমাদের কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই গতকাল একটি নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। আমরা এটি নিয়েও কাজ করছি। আশা করছি খুব ভাল একটা রেজাল্ট আসবে।
জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অপরাধী সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হবে। পুলিশ আইনের বাইরে নয়।
তিনি বলেন, শুধু ছাত্র-জনতা না, আমাদের অনেক পুলিশ সদস্যকেও আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পুলিশ হত্যার মামলাও হবে। প্রধান উপদেষ্টার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে গুরুত্বের সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভ্যানে লাশের স্তুপের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দুইজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে চেংদোলা করে ভ্যানে লাশের স্তুপের ওপর নিক্ষেপ করছেন। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি র্যাক্সিন দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। শেষে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় যুবলীগের ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ধামসোনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার সামনেই।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীরা গত ৫ আগস্ট নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় জমায়েত হতে থাকেন। পরে শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের খবরে আন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানার দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ১৫ জনের মৃত্যু হয় (ভ্যানে তোলা লাশের হিসাব বাদে)।