প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা এসেছেন।
ঢাকায় এসে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে আসতে পেরে খুবই উচ্ছ্বসিত এবং আজ সকালে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে আমার ব্রিফ গ্রহণ করেছি।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সিদ্দিকীকে উদ্ধৃত করে বলেন, তিনি বলেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়াসহ সমাজের সর্বস্তরের সবার পক্ষ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং ভবিষ্যৎমুখী ইতিবাচকতা, অন্তর্ভুক্তি ও সেবার চেতনা নিয়ে একযোগে কাজ করার উৎসাহের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরো বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ উৎসাহিত করা, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সাথে সর্বোচ্চ স্তরে সম্পর্ক গড়ে তোলা ও আমাদের উদ্যোগ এগিয়ে নেয়া এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আমাকে প্রচুর শুনতে হবে।’
তিনি বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অনেক লোকের সাথে তাদের মতামত শোনা এবং কিছু ধারণা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাত নিয়ে অর্থনৈতিক কূটনীতি ছাড়াও অর্থনৈতিক ফোরামগুলোতে আমি আমার আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আমার সহযোগী উপদেষ্টাদের কোনো অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারি কি না তা দেখতে আমি তাদের সাথে কথা বলব।’
বিশেষ দূত বলেন, ‘একটি টিমের অংশ হওয়া এবং কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে টিমের প্রয়োজন অনুযায়ী মিড-ফিল্ডার, স্ট্রাইকার বা ডিফেন্ডার হিসেবে ভূমিকা রাখার সুযোগ পাওয়া দারুণ।’
লুৎফে সিদ্দিকীকে গত ৪ সেপ্টেম্বর বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিনি আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনে প্রধান উপদেষ্টাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন।
প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে উল্লেখ করে বলা হয়, বিশেষ দূত পদে থাকাকালীন লুৎফে সিদ্দিকী উপদেষ্টার পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টাসহ এ সরকারের সদস্যসংখ্যা এ পর্যন্ত ২১।
লুৎফে সিদ্দিকী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সন্তান। তার বাবা এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকী। তিনি ১৯৯৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০০ সালের ৭ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ছিলেন। লুৎফে সিদ্দিকী যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস (এলএসই) থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
লুৎফে সিদ্দিকী বর্তমানে এলএসইয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কর্মরত আছেন। একইসাথে তিনি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অ্যাডজাঙ্কট প্রফেসর।
এর আগে তিনি ইউনাইটেড ব্যাংক অব সুইজারল্যান্ডের (ইউবিএস) বৈদেশিক মুদ্রা, সুদের হার ও ঋণবিষয়ক উদীয়মান বাজার বিভাগের বৈশ্বিক প্রধান এবং বার্কলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সূত্র : বাসস