লেবাননে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। সোমবার তাদের এই হামলায় অন্তত ৪৯২ জন নিহত এবং ১২ শতাধিক আহত হয়েছে। এর ফলে ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলছে, তারা ৮০০-এর বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। লেবানননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, দেশের দক্ষিণে বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ভারী বোমাবর্ষণ হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ জনের বেশি নারী ও শিশু রয়েছে।
সোমবারের হামলা ছিল ২০০৬ সালে ইসরাইল আর লেবানিজ গ্রুপ হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধের পর সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। দক্ষিণ লেবাননের হাজার হাজার বাসিন্দা পালাতে শুরু করেছেন, এবং দক্ষিণের বন্দর শহর সিডন থেকে রাজধানী বৈরুত যাবার রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যাম শুরু হয়ে যায়।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, হিজবুল্লাহ ইসরাইলি ভূখণ্ডের দিকে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে- এমন ইঙ্গিতের জবাবে ইসরাইলি বাহিনী এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
হাগারি বলেন, হিজবুল্লাহ বেসামরিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্র মজুদ করছে এবং ইসরাইল লেবাননের নাগরিকদের হিজবুল্লাহ যেসব এলাকায় রয়েছে সেখান থেকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
হাগারি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘গাজায় হামাসকে ধ্বংস করে সকল পণবন্দীকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং উত্তরে হিজবুল্লাহর উত্থাপিত হুমকি প্রতিহত করতে এবং উত্তর ইসরাইলের বাসিন্দাদের নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়া সম্ভব করতে আমরা কাজ করছি।’
হিজবুল্লাহ জানায়, তারা সোমবার ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে কয়েক ডজন রকেট নিক্ষেপ করেছে।
সোমবার ভোরে ইরাকে ইরানপন্থী একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ছোঁড়া ড্রোনও ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ভূপাতিত করেছে।
রোববার হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলি বাহিনী শত শত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেইনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারের জন্য ‘যা কিছু করা দরকার’ তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইসরাইল হিজবুল্লাহকে ধারাবাহিকভাবে এমন আঘাত হেনেছে যা তারা কল্পনাও করেনি।
শুক্রবার বৈরুতে হিজবুল্লাহর সামরিক নেতাদের হত্যা করার জবাবে হিজবুল্লাহ ইসরাইলে হামলা চালায়। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ লেবাননের অভ্যন্তরে পেজার এবং ওয়াকি-টকিতে দূরবর্তীভাবে বিস্ফোরক বিস্ফোরণের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে। ওই হামলায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়।
সূত্র : ভিওএ