প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরছেন হাজারো যাত্রী। আজ শনিবার সকাল থেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
গতকাল শুক্রবার থেকেই কর্মস্থলে ফিরতে পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে মানুষের ঢল নেমেছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ এ পথ দিয়েই কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাট এলাকায় ভিড়ও বাড়তে শুরু করেছে।
নৌপথে ফেরিতে এবং সড়কপথে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি, অটোবাইকসহ ছোট গাড়িতে গাদাগাদি করে বসে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ব্যক্তিগত গাড়িসহ মোটরসাইকেলের আধিপত্য বেশি। এর ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে, গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও।
কুষ্টিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসা যাত্রী আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘সংসার চালানোর তাগিদে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছি। রোববার সকালে অফিসে পৌঁছাতে হবে।’
ফরিদপুর থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসা পোশাক শ্রমিক মামুন মিয়া বলেন, ‘ফরিদপুর থেকে সিএনজিতে দৌলতদিয়া পর্যন্ত আসতে ৫০০ টাকা খরচ হয়। আবার এখন পাটুরিয়া থেকে নবীনগর যেতে মাইক্রোবাসে ৫০০ টাকা করে ভাড়া চাচ্ছে। এমনিতেই বাড়ি গিয়ে টাকা-পয়সা শেষ। এরপর এখন কর্মস্থলে ফিরতে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।’
আরেক যাত্রী পোশাক শ্রমিক আফরোজা বেগম বলেন, ‘কুষ্টিয়া থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত সিএনজিতে আসতে ৬০০ টাকা ভাড়া নেয়। এখন কর্মস্থল সাভারে যেতে প্রাইভেটকারে ভাড়া চাচ্ছে ৫০০ টাকা। সবমিলে কর্মস্থলে ফিরতে ১২০০ টাকা খরচ হচ্ছে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, ১৭টি ফেরির মধ্যে ১০টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পাঁচটি ঘাটের মধ্যে দুটি ঘাট দিয়ে ফেরি পাড় হচ্ছে। বাকি ঘাটগুলো পানি বৃদ্ধির ফলে ভেঙে গেছে। সেগুলো স্থানান্তরের কাজ চলছে।
তিনি আরও জানান, গণপরিবহণ বন্ধ থাকলেও জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো শ্রমজীবী মানুষ মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, ব্যাটারিচালিত আটোবাইক, সিএনজি, মোটরসাইকেলযোগে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে পাটুরিয়া থেকে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। তবে সামাজিক দূরুত্বের কোনো বালাই থাকছে না।