রোজার ঈদ শেষে দেখতে দেখতে চলে এসেছে কোরবানির ঈদ। তবে এবার কোরবানির গরু কিনতে হাটের ভিড় এড়াতে চাইছেন অনেকে। তারা করোনা মহামারীর এই সংক্রমণের কালে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। এতে করে অন্য সব পণ্যের মতো অনলাইনে বেড়েছে কোরবানির পশু বিক্রিও। খামারিরা লাইভ ওয়েট পদ্ধতিতে অনলাইনে ক্রেতাদের কাছে গরু বিক্রি করছেন। গজ/ফিতার মাধ্যমে গরুর ওজন মেপে বিক্রির এই পদ্ধতিকে লাইভ ওয়েট বলছেন খামারিরা।
গত বছর থেকেই লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। যদিও তখন এই ব্যবস্থা তেমন জনপ্রিয় ছিল না। কিন্তু চলতি বছর করোনা ভাইরাসের কারণে এই মাধ্যম বেশ সাড়া ফেলেছে। ক্রেতারা ঘরে বসেই গরুর ওজন জেনে দরদাম করতে পারছেন।
একটি সাধারণ গরুর লাইভ ওয়েটের ৫৫ শতাংশ মাংস পাওয়া যায়। তবে খামারিরা দাবি করছেন, লাইভ ওয়েটের ৬০ শতাংশ সলিড মাংস থাকে। এ ছাড়া হাড়, ভুঁড়ি, মাথার মাংস, যকৃৎ, ফুসফুসহ বাড়তি আরও অংশ পাওয়া যায়। এতে দামে তারতম্য হয় না।
বর্তমানে ২০০ থেকে ৪০০ কেজি ওজনের লাইভ ওয়েটের গরু ৩৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন খামারিরা। ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি পর্যন্ত লাইভ ওয়েটের গরু ৪৫০ টাকা কেজি দরে এবং ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি পর্যন্ত ওজনের গরু ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এর চেয়ে বৃহৎ ও বিরল প্রজাতির গরুগুলোর দাম কেজি দরে নয়, পুরোটা ধরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে লাইভ ওয়েট নিয়ে ক্রেতাদের অনেকে আপত্তিও করেছেন। তাদের মতে গরুর পেট ভরা থাকলে বাড়তি ১০ থেকে ১৫ কেজি ওয়েট যুক্ত হয়। যার ফলে এই সুযোগটা নিতে পারেন অনেক খামারি। তবে খামারিদের মতে স্বাভাবিকভাবেই লাইভ ওয়েটে গরু বিক্রি বর্তমানে সবচেয়ে সুবিধাজনক পন্থা। কেউ যদি চায় তা হলে ভোরেও কেনাকাটা করতে পারেন, গরুকে কিছু খাওয়ানোর আগেই।
বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, ক্রেতাদের সুবিধার্থে লাইভ ওয়েটে অনেকেই বিক্রি করছে। তবে এই পদ্ধতিতে যদি ক্রেতারা সন্তুষ্ট না থাকেন, সরাসরি দেখেও কিনতে পারেন। বর্তমানে সকল খামারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরু প্রদর্শন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এখন গরু কিনলে দুই সপ্তাহ খামারেই পরিচর্যা করা হবে। ফলে আরও বাড়তি ৫-১০ কেজি ওজন যোগ হবে। সুতরাং বর্তমানে গরু ক্রয় করাই সুবিধাজনক।