বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আক্ষেপ করা সেই ‘চোরের খনি’ এখন ‘ডাকাতের খনি’তে রূপান্তরিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘প্রতিটি দুর্নীতির সঙ্গে সরকার ও প্রশাসনের যোগসূত্র ছিল প্রায় ওপেন সিক্রেট। শুধু তাই নয়, এসব দুর্নীতিবাজরা ক্ষমতাসীন দলের পদ-পদবীধারী নেতা হওয়ায় সখ্যতা দেখা গেছে প্রভাবশালীদের সঙ্গে। টকশোতে এসব দুর্নীতিবাজরা বিরোধীদলের মুণ্ডপাত করে আর সরকারের পক্ষে জিগির তুলে। এখানেই শেষ নয়, ভোট চুরি করে নয়, এই সরকারটি গঠিতও হয়েছে জনগণের ভোট ডাকাতি করে। সুতরাং এই সরকার চোর নয়। এই সরকার ভোট ডাকাতির সরকার। ’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব নিজেই আক্ষেপ করে বলেছিলেন, তিনি পেয়েছেন ‘‘চোরের খনি’’। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে সেই ‘‘চোরের খনি’’ এখন ‘‘ডাকাতের খনি’’তে রূপান্তরিত হয়েছে। এটাই হলো আওয়ামী লীগ সরকারের সুমহান কীর্তি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত এক দশকের বেশি একটানা ক্ষমতায় থেকেও নিশিরাতের এই সরকারটির নিজেদের সাফল্যের কিছু নেই বলেই এখনো তাদেরকে অতীতের কাঁসুন্দি ঘেটে নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইতে হয়। একটানা এক যুগের বেশি ক্ষমতায় থাকার পর একটি সরকারের জন্য বর্তমান ব্যর্থতা ও অধঃপতনের এমন করুণ পরিণতি যে কতটা লজ্জার সেই বোধ এই সরকারের আছে বলেও কেউ মনে করে না। সুতরাং দেশে কারা ডাকাত, কারা ধোকাবাজ, কারা দুর্নীতিবাজ, কারা দুর্নীতিতে লিপ্ত, কোন সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজদের উত্থান হয়েছে এটা দেশের মানুষ জানে। ‘
‘আওয়ামী জাহেলিয়াতের এই অন্ধকার সময়ে ক্ষমতাসীন দলের সরকার ও প্রশাসনের প্রশ্রয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ার কিংবা আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য শাহেদ চক্রের দৌরাত্ম শুধুমাত্র নগদ অর্থ কেলেঙ্কারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়-এরা মানুষের জীবন নিয়েই ব্যবসা শুরু করে দিয়েছিল করোনা পরীক্ষার নকল সনদ দিয়ে। তাদের এই ব্যবসার বলি হচ্ছে জনগণ’ বলেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান আমলে দুর্নীতি-অনিয়ম-চুরি-বাটপারী এখন যেভাবে নির্বিঘ্নে অবাধ হয়েছে আওয়ামী শাসন ব্যাতিরেকে কখোনোই এমন ছিল না। সাহেদরাই বর্তমান আওয়ামী শাসনের নমুনা।’
করোনার আঘাতে মানুষ চিকিৎসা বঞ্চিত উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে কাতরাতে কাতরাতে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছেন তারা। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। কত মানুষ মারা যাচ্ছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নিয়েও জনমনে সন্দেহ রয়েছে। এই দুর্বিসহ সংকটের মধ্যেও চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়করার নামে শত-শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি দলের লোকেরা।’