প্রফেসর জন টিসন এর নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র আর্মি ওয়ার কলেজের ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল জাতিসংঘে বাংলাদেশ ¯’ায়ী মিশন পরিদর্শন করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রা এবং বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সুনামের প্রেক্ষিতে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের অংশ হিসেবে প্রতিবছরই ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শনে আসেন। ২১ সদস্যের এই ডেলিগেশনে ঐ কলেজে অধ্যয়নরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন উ”চপদ¯’ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান মিশনের চার্জ দ্য আফেয়ার্স ও উপ-¯’ায়ী প্রতিনিধি তারেক মো: আরিফুল ইসলাম এবং মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, সাহসী ও সুদৃঢ় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং সমগ্র-সমাজ দৃষ্টিভঙ্গির কথা স্বাগত বক্তব্যে তুলে ধরেন চার্জ দ্য আফেয়ার্স। এছাড়া তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের সার্বিক অংশগ্রহণের বিস্তারিত তুলে ধরেন। বৈশ্বিক পরিমন্ডলে জাতিসংঘ যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে সে সকল চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবদানের বিভিন্ন দিকও উল্লেখ করেন উপ¯’ায়ী প্রতিনিধি। উন্নয়ন, মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ, সাইবার নিরাপত্তা, বহুপক্ষবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, নারীর ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সম্পর্ক এবং অংশদারিত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি। রোহিঙ্গা সমস্যা, জলবায়ু পরিবর্তন ও ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জের মতো বেশ কিছু বৈশ্বিক সমস্যা যা বাংলাদেশকে যে সঙ্কটে ফেলছে তা আলোকপাত করেন চার্জ দ্য আফেয়ার্স। এসকল সমস্যার সমাধানে শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সৃষ্টির প্রয়োজন মর্মে উল্লেখ করেন উপ-¯’ায়ী প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ ¯’ায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা ও বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সামনের সারির একটি দেশ। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৬৬ হাজার ১৮১ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের ৫৪টি পিস কিপিং মিশনে অংশ নিয়েছেন। আর বর্তমানে ০৯টি মিশনে নিয়োজিত রয়েছেন ৬ হাজার ৫৪৭ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী। দায়িত্ব পালনরত অব¯’ায় এ পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন ১৪৬ জন আর আহত হয়েছেন ২২৭ জন”। এছাড়া বিগত ত্রিশ বছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্যমন্ডিত অগ্রযাত্রার বিভিন্ন দিকগুলোর কথা তুলে ধরেন ডিফেন্স অ্যাডভাইজর। প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্ররিক্রমার উপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
তথ্য-সমৃদ্ধ এই চমৎকার আয়োজন ও আতিথেয়তার জন্য ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ মিশনকে ধন্যবাদ জানান। পরিদর্শনের জন্য বাংলাদেশ মিশনকে নির্বাচিত করায় চ্যার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের প্রতিনিধিদলকেও ধন্যবাদ জানান।
প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশী খাবারে আপ্যায়ন করা হয়।