‘ভুয়া সনদের’ কারণেই করোনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, যার করোনা হয়নি, তাকে যদি পজেটিভ সার্টিফিকেট দেয়া হয়, তাহলে এই দেশ কিসের ওপর চলছে আপনারাই বুঝতে পারছেন। এমনিতেই মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ। তার ওপরে হাসপাতালে গিয়ে যদি মানুষ ভুয়া সার্টিফিকেট পায় অসুস্থতার জন্য। এরপরে কি মানুষ যাবে করোনা পরীক্ষার জন্য, মানুষ যাবে না।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ সব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে ‘স্বাস্থ্যখাতের বিপর্যয়কর অবস্থা ও মৎস্যজীবীদের দুরাবস্থা’ শীর্ষক এই মানববন্ধন হয়। মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব ও সদস্য সচিব আবদুর রহিমের পরিচালনায় মানবন্ধনের সংগঠনের ওমর ফারুক, আমির হোসেন, জহিরুল ইসলাম বাশার বক্তব্য রাখেন।
রিজভী বলেন, আজকে সংবাদপত্রের পাতায় বেরিয়েছে গত দুই দিন ধরে করোনা পরীক্ষায় মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। কারণ মানুষ যাচ্ছে না। যে অসুস্থ না তাকে যদি পজেটিভ সার্টিফিকেট দেয়া হয়, তাহলে তো তার সবই শেষ। আর যে অসুস্থ, যে আক্রান্ত হয়েছে তাকে দেয় নেগেটিভ সার্টিফিকেট। এই আতঙ্কে নিয়ে কেন মানুষ হাসপাতালে যাবে? কেন পরীক্ষা করাবে? এই কারণে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা দিনকে দিন কমে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অনাচার-অবিচার, রাজনৈতিক মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়ঙ্করভাবে দমন করার কারণে। এই দমন করার মধ্য দিয়েই আমরা দেখেছি এই অনাচারগুলো, সমাজের মধ্যে বিশৃঙ্খলাগুলো, এই জাল-জালিয়াতি, এই বাটপারি তৈরি হয়েছে, সমাজের মধ্যে সাহেদদের (রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মোঃ সাহেদ) উত্থান হয়েছে। আপনি দিনের ভোট রাত্রে দেবেন, তাহলে কি সমাজের উত্থান হবে? আপনি ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা নেই নির্বাচন কমিশন বলে দিলো সুষ্ঠু ভোট হয়েছে এবং ৪০/৪৫/৫০/৭০ পারসেন্ট ভোট হয়েছে। চতুষ্পদ জন্তু ঘুরে বেড়াচ্ছে। সংবাদপত্র-গণমাধ্যম এতো চাপের মধ্যেও, এতো হুমকির মধ্যেও তারা প্রচার করেছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রচার করেছে। আজকে ভোট নিয়ে যদি জালিয়াতি করে, তাহলে মানুষের অসুস্থতা নিয়ে জালিয়াতি হবে না কেন?
বঙ্গোপসাগরে দেশের সীমানায় অন্যদেশের জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে সরকারের ‘নির্লিপ্ত’ ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন রিজভী। আমার দেশের স্বাধীনতা কোথায়? আমার মাছ আমি খেতে পারবো না, অন্য দেশের লোক এসে মাছ ধরে নিয়ে যাবে। কারণ একটি দায়িত্বশীল সরকার নেই, জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়া সরকার নেই, একটি সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচনের সরকার নেই বলে আজকে আমার দেশের স্বাধীনতা, আমার সার্বভৌমত্ব সব কিছু বিপন্ন হয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগণের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।