শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন

ভারতীয় গরুতে সয়লাব রাজশাহীর পশুর হাট

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০২০
  • ১৯৯ বার

শেষ সময়ে রাজশাহী অঞ্চলের হাটগুলোয় ভারতীয় গরুতে সয়লাব হয়ে গেছে। হাটে উঠছে স্থানীয় খামারিদের লালনপালন করা দেশি গরুও। ফলে কোরবানির হাটেও গরুর দাম পাচ্ছেন না খামারি ও ব্যবসায়ীরা। করোনা এবং বন্যা এ সংকট আরও বাড়িয়েছে। এভাবে কোরবানির আগ মুহূর্তে ভারতীয় গরু হাটে ওঠায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রাজশাহীর খামারিরা।

এদিকে শেষ সময়ে পশুর দাম কম হলেও হাটগুলো বেশ জমে উঠেছে। ফলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এতে মরণঘাতী করোনার বিস্তার আরও বেশি ঘটার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তপথে এখনো আসছে ভারতীয় গরু। এসব গরুর একটি বড় অংশ উঠছে সিটিহাটে। কোরবানি টার্গেট করে আগে থেকে আনা ভারতীয় গরুও হাটে তুলছেন লোকজন। ফলে দাম নেই দেশি গরুর।

রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, জেলায় গরু-মহিষ রয়েছে প্রায় এক লাখ, ছাগল রয়েছে দুই লাখ ২৮ হাজার, অন্যান্য পশু রয়েছে আরও ৪২ হাজার। সব মিলিয়ে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার। কোরবানি শেষেও উদ্বৃত্ত থাকবে এক লাখ গবাদিপশু। এ পরিস্থিতিতে ভারত থেকে গরু আমদানির প্রয়োজন নেই।

তবু বানের পানির মতো ভেসে আসছে ভারতীয় গরু-মহিষ। এতে হতাশ স্থানীয় খামারিরা। তারা বলছেন, এবার বন্যার কারণে চাষিরা গবাদিপশু কম দামেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। কিন্তু করোনার কারণে হাট জমছে না। এমনিতেই পশুর দাম কম। এর ওপরে চেপে বসেছে ভারতীয় গরু। বাধ্য হয়ে কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে দেশি গরু। এতে খামারি ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ জানান, কিছু ক্যাটল করিডর দিয়ে বৈধভাবে গরু আসছে। অবৈধভাবে গরু আসার একেবারেই সুযোগ নেই। বন্যা পরিস্থিতির কারণে পদ্মার একটি বড় অংশ নজরদারিতে হিমশিম খাচ্ছে বিজিবি। এরই

সুযোগ নিতে পারেন চোরাকারবারিরা। তবে অবৈধ গরু চোরাচালান ঠেকাতে গ্রামবাসীদের নিয়ে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে বিজিবি।

রাজশাহীর সিটি বাইপাস এলাকার খামারি আবদুল মালেক বলেন, বাড়িতে গরুর ব্যাপারি তো আসেই না। হাটে সাতটি গরু নিয়ে কয়েক দিন থেকে ঘুরছি। কিন্তু গরুর বাজার একেবারে কম। এ জন্য গরু বিক্রি নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। গরুকে যে খাদ্য খাইয়ে লালন-পালন করেছি সেই দামই উঠবে না বলে মনে হচ্ছে। করোনা আর ভারতীয় গরু আসার কারণে আমাদের এই দুরবস্থা।

রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, প্রথম দিকে হাটে তো ক্রেতাই ছিল না। এখন একটু একটু করে ক্রেতারা আসছেন। তিনি দাবি করেন, হাটে ভারতীয় গরু কিছু এলেও দেশির সংখ্যা বেশি। হাটে ক্রেতার চেয়ে গরুর সংখ্যা অনেক বেশি। তাই দাম কম।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অন্তিম কুমার সরকার জানান, জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে গবাদিপশু রয়েছে। জেলায় কোরবানি ঈদে দুই লাখ গবাদিপশুর প্রয়োজন পড়ে। রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোরবানির জন্য উপযুক্ত পশু। অতিরিক্ত পশু আর করোনার কারণে দামে প্রভাব পড়েছে।

এদিকে রাজশাহীর হাটগুলোয় শারীরিক ও দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার তোয়াক্কা নেই কারও মধ্যে। হাটে আসা অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। মাস্ক নেই তার সাথে শারীরিক দূরত্ব মোটেও বজায় থাকছে না। এ কারণে আরও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আযহার উপলক্ষে শেষ সময়ে কোরবানির জন্য পশু বিক্রি বেশ জমে উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই পশু কেনাবেচার জন্য হাটে আসছেন। পশু কেনাবেচার জন্য রাজশাহী অঞ্চলে যে কয়টি হাট রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো রাজশাহী সিটি হাট। এ হাটে শুধু আশপাশের এলাকা থেকেই নয়, বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসে। আর সেই হাটে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মানছে না ক্রেতা-বিক্রেতারা। এ জন্য করোনা সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সচেতন মানুষরা মনে করছেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, হাটে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মা না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com