রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন

রাজধানীতে ফের নির্বাচনী উত্তাপ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৩০৮ বার

রাজধানীতে ফের নির্বাচনী উত্তাপ শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আগামী জানুয়ারিতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার পর প্রার্থী হতে লবিং-গ্রুপিং শুরু করেছেন নেতারা। রাজনৈতিক দলগুলোও মেয়র-কাউন্সিলর হিসেবে যোগ্য প্রার্থী খুঁজতে তৎপরতা শুরু করেছে। তবে এবার প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ক্যাসিনো কাণ্ড, অনিয়ম, দুর্নীতি বড় ফ্যাক্টর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এবং উত্তরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনিসুল হক জয় লাভ করেন। পরে আনিসুল হক মারা গেলে সম্প্রতি আতিকুল ইসলাম এক বছরের জন্য মেয়র নির্বাচিত হন।

২০১৫ সালের নির্বাচনে দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আর উত্তরে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। পাঁচ বছর মেয়াদি দুই সিটি মেয়রের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী মে মাসে।

তবে নিয়মানুযায়ী ১৮০ দিন বা ছয় মাস আগেই নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হতে হবে। সে হিসেবে নির্বাচন কমিশন চলতি নভেম্বর মাসেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর নির্বাচন হবে জানুয়ারির মাঝামাঝি বা শেষের দিকে। একই দিনে দুই সিটির ভোট গ্রহণ করা হবে বলে ইসি জানিয়েছে। নির্বাচনে দুই সিটির বর্ধিত অংশেও মেয়র-কাউন্সিলর পদে ভোট নেয়া হবে।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের এ ঘোষণা দেয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে দলগুলো। প্রার্থীরাও দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়ন পেতে। বর্তমানে দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের দুজন মেয়র থাকায় তারা প্রার্থী থাকবেন কি না তা নিয়ে জনমনে আলোচনা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ঢাকা উত্তরের মেয়র সম্প্রতি নির্বাচিত হওয়ায় এবং তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অনিয়ম দুর্নীতির কথা শোনা না যাওয়ায় তিনিই এবারো প্রার্থী থাকছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও সবুজ সঙ্কেত রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে দক্ষিণে রাজনৈতিক নানা মেরুকরণের কারণে সাঈদ খোকনের মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে এবারো তিনিই প্রার্থী থাকতে পারেন বলে তার কর্মী-সমর্থকরা মনে করেন। তাদের দাবি সাঈদ খোকন তার মেয়াদে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি আবারো মনোনয়ন না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

তবে সাঈদ খোকন মেয়র পদে মনোনয়ন না পেলে এক্ষেত্রে আরো কয়েকজন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন আলোচনায় রয়েছেন। তাদের যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন।

এছাড়া অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম এ আজিজের পুত্র বর্তমানে ডিএসসিসির ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আব্দুল আজিজও এবার মেয়র পদে লড়তে চান।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটিতে বরাবরের মতোই নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। এক্ষেত্রে তাদেরও প্রার্থী চূড়ান্ত করতে কাজ চলছে। তবে উত্তরে আবারো দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালই প্রার্থী হচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আর দক্ষিণে এবার প্রার্থী পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে সাবেক মেয়র সাদের হোসেন খোকার পুত্র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন এবার দলের মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে মির্জা আব্বাসের স্ত্রী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।

জামায়াতে ইসলামী ২০১৫ সালের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিনকে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছিল। তবে সর্বশেষ নির্বাচনে তারা প্রার্থী দেয়া থেকে বিরত থাকে। আর সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের পর জামায়াতে ইসলামী দেশের কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয়।

তবে বর্তমানে জামায়াতের নতুন আমির-সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে সেক্ষেত্রে নতুন করে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানা গেছে। তবে দলটির সূত্রে জানা যায়, ঢাকা সিটিতে জামায়াতে ইসলামী এবারো নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। সেক্ষেত্রে উত্তর সিটিতে তাদের প্রার্থী হিসেবে সেলিম উদ্দিনই থাকবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

কণ্ঠশিল্পী শাফিন আহমেদ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে আতিকুল ইসলামের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে এবার তিনি প্রার্থী থাকবেন কি না তা নিয়ে পার্টিতে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। উত্তর এবং দক্ষিণে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ঠিক করতে আলোচনা চলছে বলে দলটির সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে বড় দলগুলো ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এলডিপিসহ বিভিন্ন দল থেকেও মেয়র পদে প্রার্থী হতে নেতারা লবিং করছেন বলে জানা গেছে।

কাউন্সিলররা বাদ যাবেন অনেক : বর্তমানে যারা কাউন্সিলর হিসেবে রয়েছেন আগামী নির্বাচনে তাদের অনেকে মনোনয়ন পাবেন না বলে জানা গেছে। বিশেষ করে ক্যাসিনো কাণ্ড, অনিয়ম, দুর্নীতির কারণে আওয়ামী লীগের অনেক কাউন্সিলর এবারের নির্বাচনে প্রার্থী থেকে বাদ পড়তে পারেন। তবে যাদের ইমেজ ভালো তারা প্রার্থী হিসেবে টিকে যেতে পারেন। এজন্য পুরনোদের পাশাপাশি নতুনরাও প্রার্থী হতে চেষ্টা শুরু করেছেন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে ভোট প্রস্তুতি। প্রার্থীরা এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। কারো কারো পক্ষে সমর্থকরা পোস্টারও সাঁটাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলছে প্রার্থীদের পক্ষে নানামুখী প্রচারণা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com