মাকিন নির্বাচনের ফল পাল্টানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো যেসব চেষ্টা চালাচ্ছেন তা বন্ধ করে জো বাইডেনের কাছে হার স্বীকার করার আহ্বান জানিয়েছেন নিউ জার্সির সাবেক গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি। প্রেসিডেন্টের আইনজীবীদের দলকে তিনি ‘জাতীয় পর্যায়ের কলঙ্ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ক্রিস ক্রিস্টি ট্রাম্পের বেশ ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত।
আজ সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ২০ দিনের মতো পার হয়ে গেলেও ট্রাম্প এখনো কারচুপির ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেই যাচ্ছেন। তার নিজের দলের অনেকেই ট্রাম্পের আইনি লড়াইয়ের পক্ষে কথা বললেও এর বিরোধিতাকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
এবিসি টিভি চ্যানেলের এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস ক্রিস্টি বলেছেন, ‘যদি খোলাখুলি বলি তাহলে ট্রাম্পের আইনজীবীরা যা করছেন তা একদম জাতীয় পর্যায়ের বিব্রতকর কার্যকলাপ।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোর্টরুমের বাইরে সারাক্ষণ নির্বাচনে জালিয়াতির কথা বলে যাচ্ছে ট্রাম্পের দল। কিন্তু কোর্টরুমের ভেতরে তারা জালিয়াতির যুক্তি দেখাচ্ছে না। আমি অনেকদিন ধরে প্রেসিডেন্টের সমর্থক। তাকে আমি দুবার ভোট দিয়েছি। কিন্তু যা ঘটেনি তবুও অনবরত সেটাই ঘটেছে বলে যেতে পারি না আমরা।’
২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে প্রথম যে গভর্নর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছিলেন তিনি হলেন ক্রিস ক্রিস্টি। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের যেসব বিতর্ক আয়োজিত হয়েছে তাতে ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রস্তুতি নিতেও তিনি সহায়তা করেছেন। ক্রিস ক্রিস্টি বিশেষ করে একজন আইনজীবী, যিনি সিডনি পাওয়েলের কড়া সমালোচনা করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার পাওয়েল বলেছেন, ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতির ভোটের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ভোট বাইডেনের পক্ষে বদলে দেওয়া হয়েছে। যার পক্ষে কোন যুক্তি তিনি দেখাতে পারেননি। তিনি আরও বলেছেন, জো বাইডেন কমিউনিস্টদের টাকায় জিতেছেন।
তবে সিডনি পাওয়েল তাদের সঙ্গে কাজ করছেন না- রোববার অবশ্য এক বিবৃতিতে এমন ইঙ্গিত দিয়েছে ট্রাম্পের দল। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে এক টুইট বার্তায় সিডনি পাওয়েলকে তার আইনি দলের সদস্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পকে হার স্বীকারের আহ্বান জানাচ্ছেন আরও যেসব রিপাবলিকান
মেরিল্যান্ডের গভর্নর ল্যারি হোগান সিএনএনকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেভাবে ভোটের ফল উল্টে দিতে চাচ্ছেন তাতে, যুক্তরাষ্ট্রকে দিনকে দিন এক অরাজক দেশ বলে মনে হচ্ছে। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের উচিত এত গল্ফ খেলা বাদ দিয়ে নির্বাচনে হার মেনে নেওয়া।’
হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে মিশিগানের প্রতিনিধি ফ্রেড আপটন বলেছেন, তার অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা নিজেদের রায় দিয়েছে। নর্থ ড্যাকোটার সিনেটর কেভিন ক্রেমার বলেছেন, প্রশাসন হস্তান্তরের সময় পার হয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট হিসেবে পরিচিত পেনসিলভিনিয়াতে ডাকযোগে পাঠানো ব্যালট বাতিল করার যে মামলা করেছিলেন ট্রাম্প তা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। যা ট্রাম্পের জন্য বড় ধরনের এক ধাক্কা।
এ ব্যাপারে বিচারক ম্যাথ্যু ব্র্যান বলেছেন, ‘কতগুলো ভিত্তিহীন আইনি যুক্তিতর্ক তার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ পেনসিলভানিয়াতে এই রায়ের পরে জো বাইডেন ৮০ হাজার ভোটে এগিয়ে গেছেন।
জো বাইডেন ৩০৬ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৩২টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জিততে দরকার হয় ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।