হারতে হারতে ক্লান্ত ঢাকা চলে গিয়েছিল খাদের কিনারায়। পঞ্চম ম্যাচে এসে দুরন্তভাবে দেখা গেল দলটিকে। বাঁচা-মরার ম্যাচে দলটি দেখালো ব্যাট-বলের চমক। বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে দারুণ ফর্মে থাকা মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে ২৫ রানে পরাজিত করে লড়াইয়ে ফিরল বেক্সিমকো ঢাকা।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবার আগে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা করে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান। জবাবে রাজশাহীর ইনিংস থামে ১৯.১ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানে। পাঁচ ম্যাচে ঢাকার এটি দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে সমান ম্যাচে রাজশাহীর জয়ও দুটি, হার তিনটি।
বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে রাজশাহীর শুরুটা ছিল ভীষণ হ-য-ব-র-ল। ১৫ রানের মধ্যে নেই তিন টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যান। প্রথমে বিদায় নেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (৫)। এরপর ইমন (৬)। টেস্ট মেজাজে থেকেও টিকতে পারেননি মোহাম্মদ আশরাফুল। আট বলে এক রান করে ফেরেন তিনি সাজঘরে।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে রাজশাহীকে আশা দেখান রনি তালুকদার ও ফজলে মাহমুদ। চার ছক্কায় মুখরিত মিরপুর। এই জুটি ভয় ধরিয়ে দেয় ঢাকাকে। তবে দলীয় ৮২ রানে রনি তালুকদারকে আউট করে ঢাকাকে স্বস্তি দেন পেসার মুক্তার আলী। ২৪ বলে এক চার ও তিন ছক্কায় ৪০ রান করেন রনি।
দুই ওভার পর আবার মুক্তারের আবির্ভাব। ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই তিনি ফেরান মেহেদী হাসানকে (১)। ৯৬ রানে ৫ উইকেট নেই রাজশাহীর। ম্যাচের পাল্লা অনেকটাই ভারী তখন ঢাকার দিকে।
তারপরো রাজশাহীর হয়ে একাই ব্যাট চালাচ্ছিলেন ফজলে রাব্বি। ছক্কা হাকিয়ে পূর্ণ করেন দারুণ ফিফটি। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না। বলের বিপরীতে রানের চাহিদা ছিল বেশি। আর তাই পেটাতে গিয়ে সেই মুক্তার আলীর বলে আউট ফজলে। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে নাঈমের তালুবন্দী হন তিনি। তার আগে করে যান ৪০ বলে ৫৮ রানের দারুণ ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও তিন ছক্কার মার।
শেষের দিকে নুরুল হাসান সোহান ও ফরহাদ রেজা একটু ঝলক দেখালেও তা ছিল রাজশাহীর জন্য অপর্যাপ্ত। ১৯.১ ওভারে রাজশাহী অল আউট ১৫০ রানে।
ঢাকার হয়ে বল হাতে চার ওভারে ৩৭ রানে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন মুক্তার আলী। শফিকুল ইসলাম নেন তিন উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভীষণ বাজে ছিল ঢাকার। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানই ফেরেন দুই অঙ্কের রান স্পর্শ না করেই। চার বলে এক রান ওপেনার নাঈম হাসান। ১৯ বল খেলেও থিতু হতে পারেননি আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। করেন ৯ রান। তানজিদ ফেরেন মাত্র ২ রান করে।
তবে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ছিলেন ব্যতিক্রম। স্রোতের বিপরীতে লড়েছেন তিনি। করেন ২৯ বলে ৩৭ রান। তিন চার ও এক ছক্কা ছিল তার ঝুলিতে।
ঢাকার স্কোর সমৃদ্ধির পেছনে মূল অবদান ইয়াসির আলী ও আকবর আলীর। ইয়াসিরের দারুণ ফিফটি ও আকবরের ঝড়ো ইনিংস ঢাকাকে এনে দেয় চ্যালেঞ্জিং স্কোর। ৩৯ বলে ৬৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলে ফরহাদ রেজার বলে আউট হন ইয়াসির আলী। তার ইনিংসে ছিল নয়টি চার ও একটি ছক্কার মার। ইয়াসির আউট হলেও অপ্রতিরোধ্য ছিলেন আকবর আলী। ২৩ বলে তিন চার ও দুই ছক্কায় ৪৫ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে থাকেন তিনি অপরাজিত। ঢাকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৭৫ রান।
রাজশাহীর হয়ে বল হাতে মুকিদুল ইসলাম দুটি, মেহেদী হাসান, আরাফাত সানি ও ফরহাদ রেজা নেন একটি করে উইকেট।