মুজিব জন্ম শতবার্ষিকীকে সামনে রেখে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল ব্রাদারহুড অব ম্যাজিশিয়ান্স (রিং-২৭৯) এবং ইন্ডিয়া আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটির উদ্যোগে করোনার ক্রান্তিলগ্নেœ কর্মহীন জাদুশিল্পীদের উৎসাহ প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রতিমাসে আমেরিকা থেকে ভার্চুয়াল জাদু প্রতিযোগিতা চলমান রয়েছে। গত বছরের জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর এই ৩ মাস শুধু বাংলাদেশের জাদুশল্পীদের মধ্যে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় অক্টোবর মাস থেকে এটি সারা পৃথিবীর প্রতিযোগিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
ডিসেম্বর মাসে অনলাইন ইন্টারন্যাশনাল ম্যাজিক কম্পিটিশন (Online International Magic Competition) ফেসবুক গ্রুপে আয়োজিত বিশ্ব জাদু প্রতিযোগিতায় ১৩ টি দেশের মোট ৫৩ জন জাদুশিল্পী অংশগ্রহন করেন। ডিসেম্বর মাসের প্রতিযোগিতায়: ১ম হয়েছেন আমেরিকান জাদুশিল্পী ক্রিস হ্যরেন ফাউস্ট। ২য় হয়েছেন ২ জন: ভারতীয় জাদুশিল্পী জিগার রাভেল এবং কিউবার জাদুশিল্পী রোবারতো। আর ৩য় হয়েছেন ৩ জন: ভারত থেকে মিস দর্শনা, বাংলাদেশের নয়ন আচার্য্য এবং মরক্কোর আনাচ দাউচী।
এই জাদু প্রতিযোগিতায় ইন্টারন্যাশনাল ব্রাদারহুড অব ম্যাজিশিয়ান্স (রিং-২৭৯), বাংলাদেশ আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি এবং ইন্ডিয়া আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, -এর সাথে সহযোগী সংগঠন হিসেবে আছে: ফিলিপাইসন আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, ইজিপ্ট আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, স্পেন আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, কিউবা আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, মরক্কো আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, সিংগাপুর আমেরিকা ম্যাজিক সোসাইটি, ওয়ার্লড হিউম্যান রাইটস এ্যন্ড ডেভেলপমেন্ট (নিউইয়র্ক), জুপিটার ম্যাজিক ইন্টারন্যাশনাল (ঢাকা), পি সি সরকার মেমোরিয়াল ম্যাজিক সোসাইটি (টাঙ্গাইল), শাহমনি জাদু একাডেমী (ঢাকা), রূপান্তর ম্যাজিক একাডেমী (শরিয়তপুর), সোসাইটি অব ইন্টারন্যাশনাল ম্যাজিশিয়ান্স (কুয়েত), ভিশন ম্যাজিক একাডেমী (চট্টগ্রাম), যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ (নিউইয়র্ক), সজিব ওয়াজেদ জয় পরিষদ (ঢাকা), বঙ্গবন্ধু থিয়েটার (নিউইয়র্ক), বঙ্গবন্ধু সাহিত্য একাডেমী (খুলনা), গাঙচিল সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ (নিউইয়র্ক), ম্যাজিক সার্কেল অব বাংলাদেশ (ঢাকা) এবং বন্ধু ম্যাজিক একাডেমি (রংপুর)। আমাদের সনদপত্রে তাদের লোগো থাকছে।
এই প্রতিযোগিতা পরিচালনায় সম্মানীত বিচারক হিসেবে আছেন: কুয়েত নিবাসী বিখ্যাত জাদুশিল্পী ড. গুগামপো, মিশর নিবাসী বিখ্যাত জাদুশিল্পী ড. হ্যানি শো, বাংলাদেশ থেকে জাদুশিল্পী এবং অর্থ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুন, এবং প্রিন্স আলমগীর। এছাড়া জাদুশিল্পীদের প্রদর্শনকালের অভিনয়ের বিষয়ে নাম্বার দেন বিখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা আহমেদ শরীফ। সনদপত্রে তাদের স্বাক্ষর আছে।
এই প্রতিযোগিতা পরিচালনায় সহযোগি সংগঠন থেকে যারা সহযোগি বিচারক হিসেবে আছেন, তারা হলেন: লায়ন মতিউর রহমান টিপু, আকতার হোসেন, খালেকুজ্জামান খান লাবু, শাহ শহীদুল হক, এ্যাড মাসুদুর রহমান, মো: মাইনুল, নিখিল কুমার রায়, ঈসমাইল খান আনসারী, রাব্বী আলম, বাবু শাহ, আসগর হোসেন এবং রাশিদুল ইসলাম।
গত ২৮ ডিসেম্বর ফলাফল ঘোষনাকালে সংগঠনের সভাপতি জাদুশিল্পী খান শওকত বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সম্ভাবনাময়ী ও অবহেলিত জাদুশিল্পীদেরকে বিশ্ববাসীর নজরে আনা এবং তাঁদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি ও এ শিল্পের উন্নয়ন করা। তিনি বলেন, আমরা সবসময়ই বলেছি, শিল্পের বিচার করা খুবই কঠিন কাজ। জাদু প্রতিযোগিতায় সম্ভাব্য নির্ভুল সিদ্ধান্তের জন্য সবার মুল্যবান মতামতের ভিত্তিতে চুড়ান্ত ফলাফল তৈরী করা হয়েছে। যিনি বিজয়ী হতে পারলেন না, তার ম্যাজিকও কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হচ্ছে। তিনি একজন জাদুশিল্পী হিসেবে পরিচিতি লাভ করছেন বিশ্বের দরবারে। এটিও একটা প্রাপ্তি।
বিশ্ব ভার্চুয়াল জাদু প্রতিযোগিতা কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি ইজিপ্ট নিবাসী জাদুশিল্পী হ্যানি শো বলেন, করোনায় জাদুশিল্পীদের কোন শো নাই, কর্মহীন এই শিল্পীদের কোনো উপার্জন নাই তাঁরা বিষন্নতায় ভুগছেন। তাদেরকে উৎসাহ দেয়া দরকার। সবকিছু বিবেচনা করে এদের কল্যানে বিশ্বের একদল জাদুশিল্পীর সহযোগিতায় এভাবে প্রতিমাসে নিয়মিত প্রতিযোগিতা চলবে। যারা বিজয়ী হবেন, তাদের নিয়ে ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা আছে আমাদের।
জানুয়ারি মাসের জন্য সকল প্রতিযোগিকে ১লা জানুয়ারি থেকে ২০শে জানুয়ারির মধ্যে যেকোন ম্যাজিকের সর্বোচ্চ ৫ মিনিটের ভিডিও পাঠাতে হবে। ভিডিওতে কোন প্রকার এডিটিং করা যাবেনা। নির্ধারিত ‘অনলাইন ইন্টারন্যাশনাল ম্যাজিক কম্পিটিশন’ (Online International Magic Competition) ফেসবুক গ্রুপে অনলাইন জাদু প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এই গ্রুপেই প্রতিযোগিদের ভিডিও থাকবে, দর্শকরা যে কেউ বিচারক হিসেবে তাদের ভিডিওর নিচে কমেন্ট বক্সে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে নাম্বার দিতে পারবেন। সর্বোচ্চ নং ১০ এবং সর্বনিম্ন ১ নং। দর্শকরা ভোট দেবেন, প্রতিযোগিরা ভোট দেবেন, সহযোগি সংগঠনের কর্মকর্তারা ভোট দেবেন, বিচারক মন্ডলী ও উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যরা ভোট দেবেন, এরপর সবার ভোট এক করে জুরি বোর্ডে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রতিমাসের ২১ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত বিচার বিবেচনা চলবে। ২৫ থেকে ২৮ তারিখে চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষনা করা হবে। তাদের সনদপত্র আমেরিকা থেকে পাঠানো হবে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারীদের কাছ থেকে কোন প্রকার ফিস নেয়া হবে না।
খান শওকত বলেন: আমি ১৯৮৫ সাল থেকে জাদু প্রদর্শনী করছি। ১৯৮৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ব্রাদারহুড অব ম্যাজিশিয়ান্স (রিং-২৭৯), বাংলাদেশ শাখা গঠন করি। ১৯৯০ সাল থেকে আমেরিকাতে শো করছি। বিভিন্ন দেশের জাদুশিল্পীদের সাথে আমার পরিচয় আছে। জাদুশিল্পের কল্যানে আমরা সকল জাদু সংগঠন এবং সকল জাদুশিল্পীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি। জাদুশিল্পীদের সামনে অতীতে এমন সুযোগ ছিলোনা। এ উদ্যোগ তাদের সামনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এ প্রজন্মের প্রতিটা জাদুশিল্পীকে এ সুযোগ গ্রহন করা উচিত। আসুন, সবার অংশগ্রহনে একটি সফল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করি, এবং পিছিয়ে থাকা একদল সম্ভাবনাময়ী তরুনকে বিশ্বের সামনে নিয়ে আসি।