গণভোটে রায়ের সাড়ে তিন বছর পর অবশেষে কার্যকর হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ, যা ব্রেক্সিট নামে পরিচিত। গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রিনিচ মান সময় ২৩টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর পাঁচটা) এই চুক্তি কার্যকর হয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অর্ধশতকের অংশীদারত্বের ইতি ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের নতুন যুগ শুরু হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ৫২১-৭৩ ভোটে অনুমোদনের মাধ্যমে আইনে পরিণত হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হওয়ায় কোনো বাধা ছিল না।
কয়েক মাসের বিরোধের অবসান ঘটিয়ে ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তিতে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় একমত হয় যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন দাবি করেন, চুক্তিটি পুরো ইউরোপের জন্যই মঙ্গলজনক।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে চুক্তিটি অনুমোদন পাওয়ার পর এমপিদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘এই মহান দেশের গন্তব্য এখন জোরালোভাবেই আমাদের হাতে রয়েছে।’
এখন থেকে ভ্রমণ, বাণিজ্য, অভিবাসন ও নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এখন ভিন্ন আইন মেনে চলবে ব্রিটেন। ইউরোপের একক বাজার ও কাস্টমস ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এসে নিজের মতো করে চলবে দেশটি।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘যুক্তরাজ্য তার নিজ হাতে স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আমরা নিজেদের কাজগুলো ভিন্ন ও ভালোভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হব।’
২০১৬ সালে ব্রেক্সিটের গণভোট হওয়ার সাড়ে তিন বছর পর গত ৩১ জানুয়ারি ২৭ সদস্যের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই সংঘ থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দেন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু গত ১১ মাস তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য আইন মেনে আসছিল। অর্থাৎ, এতদিন পর্যন্ত ব্রাসেলসের বাণিজ্যিক নিয়ম মেনে চলেছে যুক্তরাজ্য। সময়সীমা শেষের আগেই উভয় পক্ষ নতুন এই বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছায়। এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনগুলোর জন্য ইইউ-যুক্তরাজ্য নতুন বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা পেল।