বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন

জামায়াত কেন ভোটে সন্দেহ বিএনপির

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ১২৬ বার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুকূল পরিবেশ না পেলে ভোটের মাঠসহ সব রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে দূরে থেকে ‘সামাজিক কার্যক্রমে’ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ২০-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াত। পৌরসভা নির্বাচনের মাঝামাঝিতে এসে দলের সেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। এখন রাজপথে ঝটিকা কর্মসূচির পাশাপাশি ভোটের মাঠেও দেখা যাচ্ছে দলের নেতাদের। শরিক দলের এমন খোলস বদলের বিষয়টিকে ‘সন্দেহের’ চোখে দেখছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও কেউ কেউ বলেছেন, এটি গভীরভাবে চিন্তার বিষয়। কাদের ইঙ্গিত পেয়ে জামায়াতের এ অবস্থান সে বিষয়ে তাদের মনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আমাদের সময়কে বলেন, দলগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি। আগে যে সিদ্ধান্ত ছিল, এখনো তা-ই রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হলো, নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ছাড়া আমরা আর নির্বাচনে যাব না। এ সিদ্ধান্তের ওপর আমরা এখনো আছি।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায় ও রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভাসহ বেশ কয়েকটি পৌরসভায় জামায়াত নেতারা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, কাউন্সিলর পদেও তাদের প্রার্থী ছিল অনেক। তবে কোনো কাউন্সিলর পদে তারা জিততে পারেনি। জামায়াত দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি।

জামায়াতের ঢাকা

মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি জামায়াত। সম্প্রতি আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার কথায় এই সিদ্ধান্ত বদল করা হয়েছে। নিবন্ধন না থাকায় জামায়াতের কোনো দলীয় প্রতীকও নেই। যে কোনো প্রতীকে তাদের নির্বাচন করার সুযোগ আছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের অংশগ্রহণ করা জামায়াতের জন্য সহজ হচ্ছে। মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আত্মীয়স্বজনের চাপে ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ কেউ কোথাও কোথাও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদে যোগদান, উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপি। এ নিয়ে ২০-দলীয় জোট বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের মধ্যেও নানা কথাবার্তা রয়েছে। জামায়াতের একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপির এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছিল জামায়াত। এমনকি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে- বিশেষ করে ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা-৫ ও ১৮ উপনির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনেই জামায়াত নেতাকর্মীর ধানের শীষ অথবা বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রে যায়নি। জামায়াত দলীয়ভাবে মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে নেতাকর্মীদের কেন্দ্রে না যাওয়ার নির্দেশনা দেয়। বিএনপি নেতারা জানান, এসব নির্বাচনে জামায়াতের সহযোগিতা চেয়ে, বিশেষ করে ঢাকা নির্বাচনে তাদের কাছে পোলিং এজেন্ট চেয়েও পাওয়া যায়নি।

জামায়াতের সংস্কারপন্থি অংশের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা আমাদের সময়কে বলেন, জামায়াত শুধু নির্বাচনেই নয়। তারা ভাস্কর্য ইস্যুতে ঢাকার রাজপথে মিছিল করেছে।

ওই নেতা বলেন, জামায়াত কোথাও থেকে নার্সিং হচ্ছে। কারণ, এরা ২০-দলীয় জোটে থেকে এলডিপির কর্নেল (অব) অলি আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত মুক্তিমঞ্চে অংশ নেয়। সম্প্রতি ধানমন্ডিতে ২০-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলেও অংশ নেন।

সম্প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনাও হয়েছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্র জানায়, এ বিষয়ে যদি এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া না হয়, তা হলে বিএনপিকে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com