মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে নানা আচরণে বরাবরই সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। গত শুক্রবার আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে জন্ম দিয়েছেন আরেকটি বিতর্কের। দুই দফায় স্ট্যাম্পে লাথি, আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর পর স্ট্যাম্প তুলে আছাড় মারেন তিনি। এমন কাণ্ডে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন হতাশা প্রকাশ করেছেন।
গতকাল শনিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে মুঠোফোনে নাজমুল হাসান জানান, সাকিবকাণ্ডে দেশের বাইরে থেকে ঘটনায় প্রচুর ফোন পাচ্ছেন। সেসব ফোন তিনি ধরছেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে এ ঘটনা এত দেশে ছড়িয়ে গেছে…আমাকে এত দেশ থেকে ফোন করছে যে আমি ফোন ধরছি না। বেইজ্জতি চরমে পৌঁছে গেছে। এগুলোর সমাধান না হলে ঘরোয়া লিগ খেলার কারণ দেখি না। ’
তিনি বলেন, ‘লজ্জার চরম জায়গায় নিয়ে গেছে। সব শেষ করে দিয়েছে। আগেও হয়েছে কিন্তু এবার একদম চরম বেইজ্জতি। বাংলাদেশের বাইরের কেউ তো এসব সমর্থন করছে না। যা সমর্থন সব আমাদের দেশেই।’
অক্রিকেটীয় আচরণ হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এটিকে সাকিবের প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন। আসলে ঠিক কী কারণে সাকিব এমন ঘটনা ঘটাল সেটি জানতে ইতিমধ্যে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার বোর্ড সভার কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং নিয়ে চলে আসা অভিযোগ নিয়ে বোর্ড সভাপতি বলেছেন, ‘আমার প্রথম কথা হলো যদি কারও ভাবনায় এরকম চিন্তা থাকে যে ঘরোয়া ক্রিকেটে এরকম হয় তাহলে খেলার দরকার কি? যতক্ষণ পর্যন্ত মীমাংসা না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত খেলার তো দরকার নেই। মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যা বলছে, এসব খেলায় আগে সব সেটিং থাকে, এই করা হচ্ছে, ওই করা হবে, তাহলে তো এই খেলার কোনো মানে হয় না। আগে সমস্যার সমাধান করো তারপর মাঠে নামো। কেন আমরা খেলাব? তাও আবার কোভিডের মধ্যে। যেখানে ১ কোটি টাকারও বেশি বাড়তি খরচ করছে বোর্ড শুধুমাত্র কোভিডের কারণে। এতকিছু করে, এত কথা শোনার তো দরকার নেই।’
আম্পায়ারিং নিয়ে কোনো ক্লাবই অভিযোগ করেনি বলে দাবি করেছেন পাপন। তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা ম্যাচের রিপোর্টে থাকে। সেখানে কিছু নেই। ওরা (সিসিডিএম) বলছে, কোনো ক্লাবের কোনো সমস্যা নেই। আম্পায়ারিং নিয়ে এর আগে অভিযোগ ছিল। ক্যামেরা লাগানোর পর তো এসব অভিযোগ বন্ধ হয়েছে। এরপর একবারও শুনিনি। কেন তাহলে এরকম এবার বলা হচ্ছে একটা ঘটনার পরই। আবার যেহেতু আম্পায়ারিং নিয়ে কথা উঠেছে আমি জানতে চাই ক্লাবগুলো থেকেই তাদের কোনও অভিযোগ আছে কিনা।’
শুক্রবারের ঘটনায় আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির রিপোর্টে ভিত্তিতে সাকিবকে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ ও ৫ লাখ আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। বিসিবি কোনও শাস্তি দেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বোর্ড সভাপতি বলেছেন, ‘আগে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসুক তারপর দেখা যাবে।’