‘বাংলাদেশী কমিউনিটিতে মাদক সমস্যা’ শীর্ষক আলোচনা ও দিক নির্দেশনামূলক সভায় বক্তারা বলেছেন, মহামারী মাদকের ভয়াবহতা থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে সম্মিলিতভাবে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তাদেরকে সময় দিতে হবে, তাদের বুঝতে হবে, তাদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে। বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিককালে আমরা প্রায় দুই ডজনের মতো নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনাময় সন্তান হারিয়েছি। তাদের অনেকেই মদকাসক্ত ছিলো। অথচ তা আমরা হয়তো জানতাম না, আবার জেনেও না জানার ভান করেছি। সত্য গোপন করেছি। যার পরিণতিতে তাদের অকাল মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যু কারো কাম্য নয়। বক্তারা বলেন, সবাই মিলেই মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
বাংলাদেশী সচেতন সচেতন সমাজ, নিউইয়র্কের ব্যানারে গত রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউস্থ পানশী রেষ্টেুরেন্টের ব্যাকইয়ার্ডে মনোরম পরিবেশে অয়োজিত উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সভার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, প্রবীণ প্রবাসী নাসির আলী খান পল। এই সভা আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলো বাংলাদেশী-আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশন (বাপা), নিউইয়র্ক। সদস্য সচিব ও কমিউনিটি বোর্ড-১২ এর সদস্য আনাফ আলমের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সভার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
সভায় বাপা’র সভাপতি ক্যাপ্টেন কারাম চৌধুরী সহ স্থানীয় পুলিশ প্রিসেঙ্কটের দু’জন অফিসার অতিথি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রিসেঙ্কটের দুই কর্মকর্তাকে প্ল্যাক দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক এমপি ও সাপ্তাহিক ঠিকানার চেয়ারম্যান এম এম শাহীন, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিষ্ট হাসান ফেরদৌস, সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন সাগর, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কবি সালেম সুলেরী, ডা. ঝুন্নুন চৌধুরী, ডা. আকতার হোসেন, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সেক্রেটারী মনজুর আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম, শহীদ পরিবারের সন্তান ও সাংবাদিক-লেখক ফাহিম রেজা নূর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ, ইমাম কাজী কাইয়্যুম, সাংবাদিক-লেখক রওশন হক, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট মিনহাজ আহমেদ সাম্মু, সাবুল উদ্দিন, ইউএস আর্মীর শেখ আল আমীন, নতুন প্রজন্মের অনুভা শাহীন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা মাকদের ভয়াবহতার বিষয়ে জনসচেতনা বৃদ্ধি সহ মাঝে-মধ্যে এলাকা ভিত্তিক সভা-সমাবেশ করা এবং সন্তানদের সময় দেয়া সহ তাদের অবসর কাটানোর সময়যোপযুগী খেলাধুলা বা বিনোদনের ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, আমেরিকান সমাজ ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে তাদের সাথে বন্ধুসুলভ আচারণের মাধ্যমে পারিবারিক, সামাজিক আর ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। জোর-জবরদস্তি করে সন্তানদের মাঝে মূলবোধ জাগ্রত করা যাবে না।
বক্তারা বিভিন্ন বরোতে বরোতে মাদক বিরোধী সমাবেশ আয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এসব সমাবেশে ভুক্তভোগী সন্তান ও তাদের অভিবাবকদেরও অংশ গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের ভালো-মন্দ অভিজ্ঞতা সবাইকে শেয়ার করতে হবে। মাদকের ভয়াবহতার কথা সবাইকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে লজ্জা পেলে চলবে না বা এসব বিষয় গোপন েেখ সমস্যার সমাধান হবে না। বক্তারা মাদক বিরোধী কর্মকান্ড সঢল করতে ব্যক্তি থেকে শুরু করে সমাজিক সংগঠনগুলোর দায়িত্বের কথাও স্বরণ করেন।