২০০৪ সালের লাক্স আনন্দধারা মিস ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ তানজিকা আমিন। এর পর কেটে গেছে অনেক বছর। কাজ করেছেন নাটক, চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনে। ২০১৬ সালে দেশটিভিতে প্রচারিত নাট্যনির্মাতা ইমরাউল রাফাতের পরিচালনায় ‘কলিং বেল’ ডেইলি সোপ’-এ অভিনয় করেছিলেন তানজিকা আমিন। পাঁচ বছর পর একই পরিচালকের পরিচালনায় আবারও একটি ছয় পর্বের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করলেন। নাটক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি…

অনেকদিন পর টানা শুটিং করলেন। কেমন লাগল?

ছয় পর্বের ধারাবাহিক নাটকের প্রত্যেকটি পর্বের আলাদা গল্প এবং আলাদা নাম। তবে প্রত্যেকটি পর্বেই আমি অভিনয় করেছি। আমার সঙ্গে আরও আছেন সাজু খাদেম, তামিম মৃধাসহ আরও বেশ কয়েকজন শিল্পী।

দীর্ঘদিন পর ইমরাউল রাফাতের নির্দেশনায় কাজ করা প্রসঙ্গে বলুন।

ইমরাউল রাফাত বেশ গুছিয়ে কাজ করে। ডিটেইল কাজ করে। যে কারণে তার পরিচালনায় কাজ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। কলিং বেলের পর তার সঙ্গে কাজ করা হয়েই উঠছিল না। অবশেষে কাজ হলো। ছয়টি পর্বের ছয়টি গল্প। আমার কাছে প্রত্যেকটি গল্পই ভালো লেগেছে। আশা করছি দর্শকেরও ভালো লাগবে।’

এনটিভিতে আপনার ‘মেহমান’ নাটকটি প্রচার হচ্ছে…

অনেক দিন ধরে এই নাটকের কাজ করছি। করতে হচ্ছে। জীবিকার তাগিদেও আমাদের শুটিং করতে হয়।

আপনার কি কাজ কম করা হয়?

ঠিকই ধরেছেন, কাজ কমই করা হয়।

সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ আছে কি?

কোনো কারণ নেই। আমি যে সময়টায় বিরতি নিয়েছিলাম, তখন বিনোদন অঙ্গনে অনেক মেধাবী মেয়ে কাজ শুরু করে। আমি আবার একটু ঘরকুনো। আমার মতো থাকতে পছন্দ করি। তাই আমার সঙ্গে কারও যোগাযোগ ছিল না। সেই সময়ে যারা কাজ শুরু করেন, তাদের সঙ্গে আমার আর মানিয়ে নেওয়া হয়ে ওঠেনি। এটা আমারই ব্যর্থতা।

এই বিরতি শুরু কবে থেকে?

আমার বিয়ের পর থেকে এটা হয়েছে। ডিভোর্সের পরও অনেকটা সময় পর্যন্ত। ২০১১ সালের দিকে আমি বিয়ে করলাম। এসব কারণে লম্বা সময় কেটে গেল। বিয়ের পর আমি কিন্তু নিজের ইচ্ছাতেই কাজ কমিয়েছি। তখন বয়স একটু কম ছিল, মনে হতো যে না করলেও হয়তো চলবে। আমি ২০০৪ সাল থেকে বিনোদন অঙ্গনে কাজ করছি। তখন টানা খণ্ডনাটক ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি। আমি নিজেকে আরও মেলে ধরতে না পারার কারণ আমিই।

চলচ্চিত্রেও আপনি অভিনয় করেছিলেন। এর পর আর নেই।

আমি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছি। লাক্স আনন্দধারা ফটোজেনিকে রানারআপ হওয়ার পর ‘বকুল ফুলের মালা’ নামের একটি চলচ্চিত্রে আমি অভিনয় করেছি রিয়াজ ভাইয়ের বিপরীতে। চলচ্চিত্রটি সেভাবে আশানুরূপ সাফল্য পায়নি। এর পর চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সাহসটাও হয়নি আমার। তবে পরিচিত সবাই আমাকে বলতেন, ফিল্মে নিয়মিত হলে অনেক ভালো করতাম। আমার হাইট অ্যান্ড এভরিথিং চলচ্চিত্রের উপযোগী। আমি জানি, আমি দেখতে অসুন্দর নয়, খুব বেশি খারাপ কাজও করি না। সবার প্রতি সম্মান বজায় রেখেই বলছি, আমার চেয়ে আরও কম যোগ্য হয়েও তারা অনেক ভালো কাজ করে ফেলেছে। তবে দোষ কিন্তু আমার।

চলচ্চিত্রে নতুন করে প্রস্তাব পেয়েছেন?

প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু এতটা কমার্শিয়াল সিনেমায় অভিনয় করতে রাজি হইনি।

কোন ধরনের সিনেমায় অভিনয় করতে চান?

নাচে-গানে ভরপুর সিনেমায় মোটেও কাজ করতে চাই না। কারণ আমি নাচিও খুব জঘন্য। গল্পনির্ভর চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই।

আপনার কি মনে হয় বিয়ের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল?

একদমই তা নয়। আমাদের একটা অভ্যাস, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সেটা যদি ঠিকমতো কাজ না করে, তা হলে বলি যে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। আমার বিয়ের ডিসিশন পারফেক্ট ছিল, ডিভোর্স আনফরচুনেটলি হয়ে গেছে। সুন্দর সময় কেটেছে। আমার সময়টা আমি উপভোগ করেছি। এসব নিয়ে আমার কোনো অনুতাপ বা অনুশোচনা নেই।

সংসারজীবন নিয়ে এখন আর কোনো চিন্তাভাবনা?

বিয়ে করব। বিয়ে করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। আমার মা-বাবা নাতি-নাতনির মুখ দেখার জন্য অস্থির হয়ে যাচ্ছেন। আমি তো তাদের একমাত্র সন্তান, আমার প্রতি তাদের একটা প্রত্যাশাও আছে। আমারও তো জীবনে একজন সঙ্গী দরকার।

জীবনসঙ্গীর দেখা কি পেয়েছেন?

প্রচারণা চলছে আর কী। খোঁজাখুঁজি চলছে। বিয়ে করলে অবশ্যই প্রেম করেই করব। কারণ একটা জানাশোনা তো লাগবেই। আর্ট মাধ্যমে আমরা যারা কাজ করি, তাদের জীবনধারণটাই একটু আলাদা। প্রথম বিয়েতে একটা ধাক্কা খাওয়াতে পরেরটা বুঝেশুনে করতে চাই।