রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন

মুনিয়াকে ধর্ষণ-হত্যা মামলায় পিয়াসা ২ দিনের রিমান্ডে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২১
  • ১৪৪ বার

মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগের মামলায় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসী এই রিমান্ডের আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তিনি গত ১৩ সেপ্টেম্বর পিয়াসাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ এই রিমান্ড আবেদন করেন। যার উপর রোবরার পিয়াশার উপস্থিতিতে শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পিয়াসার পক্ষে অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পিয়াসার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর, তার বাবা, মা ও স্ত্রীসহ আটজনকে আসামি করে ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত গুলশান থানার ওসিকে অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- আনভীরের বাবা আহাম্মদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা, স্ত্রী সাবরিনা, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মুনিয়ার বাড়ীওয়ালা ইব্রাহিম আহমেদ রিপন, তার স্ত্রী শারমিন এবং আনভীরের গার্লফ্রেন্ড সাইফা রহমান মিম।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মুনিয়ার রূপ-লাবণ্যে মোহিত হয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর তাকে কলেজ হোস্টেল থেকে ২০১৯ সালের জুন মাসে ৬৫ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে। তাকে ৭/৮ মাস ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। বিষয়টি অপর আসামিরা জেনে গেলে আনভীরের বাবা -মা পিয়াসার মাধ্যমে মুনিয়াকে তাদের বাসায় ডেকে এনে ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। অন্যথায় তাকে হত্যার হুমকি দেয়। এ অবস্থায় আনভীর বিয়ের আশ্বাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে কুমিল্লায় বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। মুনিয়ার সঙ্গে আনভীর মোবাইলে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিয়ের আশ্বাস দিতো।

আরও জানা যায়, গত ১ মার্চ পুনরায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মুনিয়াকে কুমিল্লা থেকে গুলশানে মাসিক এক লাখ ৩০ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে আনভীর। বাসায় একা রেখে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বিয়ের প্রলোভনে তাকে ধর্ষণ করে। এতে মুনিয়া ২/৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ পর্যায়ে মুনিয়া আনভীরকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি অপর আসামিদের মধ্যে প্রকাশ পেলে তারা পারিবারিক সুনাম, সুখ্যাতি রক্ষায় মুনিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে আনভীর মুনিয়াকে কুমিল্লা চলে যেতে বলে। না হলে তার মা তাকে মেরে ফেলবে বলে জানায়। তখন মুনিয়া লাইভে এসে সবকিছু ফাঁস করে দেবে বলে আনভীরকে জানায়। তখন আনভীর মুনিয়াকে বলেন,‘এত সময় তুই পাবি না। আমি তোকে দেখে নেবো।’

নুসরাত জাহান অগিযোগে বলেন, ‘মুনিয়া ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে আসামিদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঢাকা ছেড়ে যশোর পালিয়ে যেতে চায়। এ জন্য সে ২৬ এপ্রিল সকালে দুই দফা বাড়িওয়ালা এবং তার স্ত্রীর কাছে গাড়ি চায়। তারা গাড়ি না দিয়ে উল্টো বিষয়টি অপর আসামিদের কাছে ফাঁস করে দেয়। তখনই সকল আসামি পরস্পর যোগসাজসে মুনিয়াকে বাসায় আটকে রেখে হত্যার ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করে এবং কিলিং মিশন দিয়ে মুনিয়াকে ধর্ষনাত্তোর হত্যা করে তাদের উদ্দেশ্যে হাসিল করে।

গত ১ আগস্ট রাতে পিয়াসার বারিধারার বাসায় অভিযান চালিয়ে মদ, ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন গুলশান থানার মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর গুলশান, ভাটারা ও খিলক্ষেত থানার পৃথক তিন মামলায় তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। কয়েক দফা রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর ভাটারা থানার মামলায় পিয়াসার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি পুলিশ। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভাটারা ও খিলক্ষেত থানায় দায়ের করা মাদকের পৃথক দুই মামলায় পিয়াসার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকায় মুক্তি মেলেনি পিয়াসার।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com