রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে অসময়ে পদ্মায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পদ্মা তীরবর্তী এলাকার কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদী অঞ্চলে হালকা বাতাস দেখা দেয়ায় পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। গোয়ালন্দ উপজেলায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পশ্চিমে নতুন পাড়া থেকে শুরু করে দেবগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার পাড় জুড়ে ভাঙন চলছে। ভাঙনে এসব এলাকায় কৃষকের রোপন করা টমেটো, বেগুন, মরিচ ও সরিষা খেত বিলীন হচ্ছে।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের দেবগ্রাম ও কাওয়ালজানি এলাকায় ভাঙনের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। গত দুই সপ্তাহে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। এলাকার কৃষকরা সবজি খেত চোখের সামনে বিলীন হতে দেখছেন।
কাওয়ালজানি গ্রামের কৃষক রুস্তুম আলী সরদার (৬০) বলেন, ‘এক সপ্তাহে এ এলাকার অন্তত অর্ধশত বিঘা সবজি খেত নদীতে বিলীন হয়েছে। আমার দুই বিঘা জমিতে প্রায় ১৮ হাজার টাকা খরচ করে টমেটো লাগিয়েছিলাম। তার প্রায় অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে এভাবে নদী ভাঙন দেখা দেবে কল্পনাও করতে পারিনি।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছর গোয়ালন্দে প্রায় ১ হাজার ৪১৮ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক সবজির আবাদ হয়েছে। কিন্তু দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম ও ছোটভাকলা ইউনিয়নে পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়ায় কৃষি ও ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে।
দেবগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম জানান, ভাঙন বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
ভাঙন এলাকা ঘুরে দেখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘এ শুষ্ক মৌসুমে এভাবে নদী ভাঙন দেখা দেবে তা আমাদের কাছে কল্পনাতীত মনে হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহের অনেক ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাব।’
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবায়েত হায়াত শিপলু জানান, ভাঙনের বিষয়টি তারা জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন। সেই সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীকেও অবগত করা হয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি