শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন

বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ এ অনিয়ম সংঘটিত হচ্ছে কীভাবে?

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ২৩৯ বার

কুয়াকাটাসংলগ্ন সাগর তীরে চলছে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিকো এই নির্মাণের কাজ পেয়েছে। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠান সরাসরি বাঁধ নির্মাণের কাজটি না করে স্থানীয় কিছু সাব-ঠিকাদার নিয়োগ করেছে। আর তাতেই ঘটছে বিপত্তি।

এই সাব-ঠিকাদাররা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় নিজেদের ইচ্ছামতো এমন সব কাজ করছেন যা অনিয়ম তো বটেই, চূড়ান্ত বিচারে দুর্নীতিও। প্রায় ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ সাগর তীরের এই বাঁধটির নির্মাণকাজ চলছে লবণাক্ত বালি আর নরম কাদামাটি দিয়ে।

অথচ বেড়িবাঁধটি নির্মাণের কথা শক্ত মাটি দিয়ে। সবচেয়ে বড় অনিয়মটি হলো, মাটি সংগ্রহ করতে উজাড় করা হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজারেরও বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। আর এতে পরিবেশের ভারসাম্য হারানোর মতো চরম ঝুঁকিতে পড়েছে দক্ষিণ উপকূল ও এর অধিবাসীরা।

বলার অপেক্ষা রাখে না, লবণাক্ত বালি ও নরম কাদামাটি দিয়ে তৈরি হওয়া বাঁধ কোনোক্রমেই টেকসই হবে না। সমুদ্রের সামান্য ঢেউ কিংবা জলোচ্ছ্বাসেই ধসে পড়তে পারে এই বাঁধ।

প্রকল্পটির শর্ত অনুযায়ী বাঁধ নির্মিত হওয়ার পর তা ঘিরে সবুজ বেষ্টনী তৈরি হওয়ার কথা। তাছাড়া কথা ছিল, বাঁধের প্রায় পুরোটাই বেঁধে ফেলা হবে কংক্রিটের ব্লকে। কিন্তু যেভাবে কাজ চলছে, তাতে এই বাঁধ বর্ষার একটি মৌসুমেও টিকবে কিনা সন্দেহ।

আর সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা দূরে থাক, উল্টো পাঁচ হাজারের বেশি সবুজ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে মাটি আহরণের নামে।

বাংলায় একটি বাগধারা আছে-‘বালুর বাঁধ’। এর অর্থ সামান্যতেই যা ভেঙে যায়। আলোচ্য বাঁধটি তেমনই একটি বাঁধ হিসাবে নির্মিত হতে চলেছে। প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক, ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয় করে এমন একটি বাঁধ নির্মাণের যৌক্তিকতা কী? গাছ কাটার বিষয়ে বন কর্মকর্তারা অভিযোগ করলেও তাতে কোনো ফল হয়নি।

পুলিশ বলছে, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই যদি হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? আমরা মনে করি, বনাঞ্চল ধ্বংস এবং বালুর বাঁধ নির্মাণের বিষয় দুটিতে সরকারের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ জরুরি। তা না হলে বিশ্বব্যাংকের দেওয়া পুরো টাকাটাই জলে যাবে আর বনাঞ্চল ধ্বংস হওয়ার খেসারত হিসাবে দুর্ভোগে পড়বে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com