হিমালয় পর্বতমালা থেকে বেরিয়ে আসা নদীর অববাহিকাগুলোতে থাকা ভারত ও বাংলাদেশের জনপদগুলোর জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে (পিএনএএস বা পিনাস)’ এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই দশকের যে কোনো সময়ে ভেসে যেতে পারে হিমালয়ের অন্তত ৫ হাজার হ্রদ। আর এর ফলে হিমালয়ের কোলে থাকা গ্রাম ও জনপদগুলো বন্যায় ভেসে যাবে। খবর : আনন্দবাজার।
গতকাল ভারতের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যান্টার্কটিক অ্যান্ড ওশান রিসার্চের (এনসিএওআর)’ অধিকর্তা মুথালাগু রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন, পরিবেশ দূষণের ফলে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে হিমালয়ের হিমবাহগুলোর বরফ দ্রুত হারে গলছে। হিমবাহগুলোর সৃষ্টিতত্ত্বসংক্রান্ত সব মডেল নিয়েই কম্পিউটারে সিমুলেশন করে এবং বিভিন্ন উপগ্রহের পাঠানো তথ্যের সাহায্যে গবেষকরা এ পূর্বাভাস দিয়েছেন।
গবেষকদের অন্যতম জার্মানির পোস্টড্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক জর্জ ভেহা ও অলিভার কোরুপ জানান, হিমালয় পর্বতমালার অন্যান্য অংশের চেয়ে সিকিম হিমালয়সহ পুরো পূর্ব হিমালয়ে বন্যার আশঙ্কা অন্তত তিনগুণ বেশি। বরফ গলা পানির তোড়ে হ্রদগুলোর পানিকে ঘিরে থাকা মাটি ও নুড়ি পাথরের দেয়ালগুলো ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘মোরেন’।
গবেষকরা আরও জানান, এ মোরেনের ফলে এই দশকেই হিমালয় পর্বতমালার একটি বড় অংশে ভয়াল বন্যা হবে। যাকে গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড (জিএলওএফ বা গ্লফ) বলা হয়। হিমালয়ের কোলে যে হ্রদগুলো বেশি গভীর ও বরফ গলা পানি বেশি, সেই হ্রদগুলোর দেয়ালই ভেসে গিয়ে এ বন্যা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন গবেষকরা।